জুমবাংলা ডেস্ক : এক সময়ের অবহেলিত পার্বত্য অঞ্চলে লাগছে উন্নয়নের ছোঁয়া। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পাড়ার বাসিন্দারা এখন চান নাগরিক নানা সুবিধা। তাদের এ চাওয়ার মূলে আছে হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ একটি সড়ক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন এ সড়কটি রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ের গা বেয়ে সীমান্ত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের শেষ মাথা টেকনাফ পর্যন্ত।
পাহাড় আছে; কিন্তু তার মাথা পোড়া। পাহাড়ের চূড়ায় গাছপালা পুড়িয়ে তৈরি হয় জুমচাষের জমি। এখনও সেই ধারা অব্যাহত আছে ঠিকই; তবে অনেকটাই কমে এসেছে সেই চল। কারণ, একটা সময় পাহাড়ের বেশির ভাগ মানুষ শুধু জুম চাষের ওপরই নির্ভরশীল ছিল।
সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবেই ফলানো হচ্ছে পেঁপে, কলা কিংবা সবজি বাগান। কবছর আগেও ক্রেতাসংকটে ফসলের ন্যায্যমূল্য পেতেন না পার্বত্য অঞ্চলের কৃষক। আবার দূরের শহরে ফল বা ফসল বেচতে যাওয়ারও উপায় ছিল না। কারণ, দুর্গম পথ বেয়ে ফলফলাদি শহরে নেয়া যেমন ঝক্কির, তেমনি সময় ও অর্থ অপচয় অবধারিত।
তবে এমন দশা থেকে মুক্তি মেলার পথ মিলছে পাহাড়ে। সবুজ পাহাড়ের পা ছুঁয়ে, আর গা বেয়ে নির্মিত হচ্ছে ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক। যার প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিলোমিটারের কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৭৩ কিলোমিটার সড়ক এখন যান চলাচলের উপযোগী। এ সড়কের কল্যাণে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ নানাবিধ নাগরিক অধিকারের দাবি তুলছেন।
তারা বলছেন, এখনও এখানে নেটওয়ার্কের সমস্যা আছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংকটতো আছেই। এ দুটি বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে এখানকার জনগোষ্ঠীর খুব উপকার হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন এ সড়কের কারণে এরই মধ্যে ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন পার্বত্য অঞ্চলের কৃষকরা।
সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদুর রহমান বলেন, তিন বছর আগে স্থানীয় একজন একটি পেঁপে নিয়েছিলেন। দাম ছিল ৫০ টাকা। ঠিক একই জায়গায় এ বছরের শুরুতে একই পেঁপে দুটি কিনেছি ৬০ টাকা দিয়ে। সুতরাং এ একটা রাস্তা এখন তাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট কীভাবে বদলে দিয়েছে, এটা তার একটা উদাহরণ।
কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২৪ সালের মধ্যে ৩১৭ কিলোমিটার সড়কই দৃশ্যমান হবে। বাকি ৭১৯ কিলোমিটার সড়ক তৈরি হবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে। সড়কটির এক প্রান্তে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত, আর অন্য প্রান্তে থাকবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।