জুমবাংলা ডেস্ক : দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই কন্যা দীপশিখা (৭) ও পূজার (১৫) জন্য নতুন জামা কিনেছিলেন বাবা দীপক চন্দ্র রায়। সেই নতুন জামা পরে মা-বাবার সঙ্গে পূজামণ্ডপ ঘোরার সুযোগ হলো না ওদের। দীপক চন্দ্র রায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের পাঞ্জিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
গত রবিবার পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা বড়শশী ইউনিয়নের বরদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে আরো অনেকের সঙ্গে প্রাণ হারায় দুই কন্যাশিশু দীপশিখা ও পূজা।
এলাকাজুড়ে এখন বিরামহীন মাতম। দুই কন্যাসন্তানকে হারিয়ে মা সন্ধ্যা রানী ও বাবা দীপক চন্দ্র শোকে পাথর।
ঘটনার দিন গত রবিবার স্থানীয়রা দীপশিখার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নিখোঁজ থাকে পূজা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পূজার মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে নদীতে ভেসে উঠলে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দীপক চন্দ্র রায় জানান, ওই মন্দিরে পূজা দিতে যাওয়ার একমাত্র বাহন নৌকা। ওই দিন নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ছোট মেয়ে দীপশিখার মরদেহ পেয়েছিলেন। আর দুই দিন পর মঙ্গলবার পেলেন পূজার মরদেহ।
দীপশিখা ও পূজার মা সন্ধ্যা রানী রায় বলেন, ‘দুই কন্যাকে অনেক আদর করে প্রতিদিন নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দিতাম। পরিবারের সবার আদরের ছিল দুই বোন। দুর্গাৎসবে কোথায় কোথায় বেড়াতে যাবে সে পরিকল্পনাও করেছিল দুজন। ওরা আর কোনো দিন দুর্গাৎসবে কোথাও বেড়াতে যাবে না…। ’
সন্ধ্যা রানী আর বলতে পারেন না। পলকহীন তাকিয়ে থাকেন দূরদিগন্তে। প্রবল ধারায় চোখ বেয়ে নামে জল।
একটু পর ফের বলেন, ‘দুই মেয়ের জন্য ওদের বাবা নতুন জামা কিনেছিলেন। খুব পছন্দ করেছিল তারা। নিষ্পাপ শিশু দুটি তো কোনো অপরাধ করেনি। তাহলে ভগবান কেন তাদের তুলে নিল…!’
দীপক চন্দ্র রায়ের বাবা সুবেন্দ্রনাথ বর্মণ জানান, পরিবারের ১১ জন সদস্য ওই দিন বরদেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার পথে নৌকাডুবির ঘটনায় পতিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।