‘প্রিয় বাবা, তোমার শূন্যতা খুব বেশি অনুভব করছি। সকালে জেগে ওঠার জন্য এখন আর কেউ বকাবকি করে না। বাড়ির যে গাছগুলোতে রোজ পানি ছিটিয়ে সজীব করে রাখতে তুমি, তারাও এখন খুব বিষণ্ন, নির্জীব। ট্রাফিক সিগনালে লালবাতি জ্বলে উঠলে যে ভিখারীটি গাড়ির কাচের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে, সেও তোমার বেশ অভাববোধ করছে। আমি, আমরা সবাই তোমার অপেক্ষায় দিন গুনছি। বাবা, আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। তুমি ফিরে এসো বাবা। একবার আমি তোমাকে ড্যাড বলে ডাকতে চাই।
চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র চট্টলবীর এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী এক-এগারোর সময় গ্রেফতারের পর কারাগারে থাকাকালীন সময়ে মেয়ে ফৌজিয়া সুলতানা টুম্পা বাবার কাছে লিখেছিলেন এই চিঠি।
মরহুম মহিউদ্দীন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রিয় বোন টুম্পা’র ১১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তুলে ধরেছেন সেই চিঠি। লিখেছেন-‘জনকের প্রতি আবেগঘন উষ্ণতা মেখে আমার আদরের ছোট বোন অভিমানী ফৌজিয়া সুলতানা টুম্পার জীবনের প্রথম এবং শেষ চিঠি’।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন টুম্পা। ২০০৮ সালের ১৭ অক্টোবর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, টুম্পা অনেক সাধাসিধে ছিল। তার বাবা মেয়র- এই বিষয়টি আমরা অনেকেই জানতাম না। এক-এগারোর সময় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রেফতার হলে জানতে পারি টুম্পা তার মেয়ে।
ড. অনুপম সেন বলেন, টুম্পা তার মৃত্যুর আগে পিতার সঙ্গে শেষ দেখা করতে পারেনি। সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার টুম্পার বাবার প্রতি নির্দয় আচরণ করে। টুম্পাকে দেখার জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়নি। এমনকি তিনি মুক্তি পাওয়ার পরও ব্যাংককে যেতে সরকার তালবাহানা করে যাত্রা বিলম্বিত করেছিল। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসেই তিনি টুম্পার মৃত্যু সংবাদ পান। এটা শুধু মহিউদ্দিন চৌধুরীর জন্য নয়, আমাদের সকলের জন্য একটি মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।