জুমবাংলা ডেস্ক: নড়াইল সদর হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়ম এবং অভিযোগের কথা সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তজার কাছে জানানোর জেরে এক রোগীর স্বজনকে জুতাপেটার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনকারী ওই নারী একই হাসপাতালের আয়া।
জানা গেছে, সদর উপজেলার বাসগ্রামের মিনারুল মোল্লার ১৫ মাসের মেয়ে রোকাইয়া ডায়রিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। শনিবার সকালে নড়াইল-২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তজা সদর হাসপাতালে ঝটিকা অভিযান চালান। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে অফিস কক্ষ ঘুরে দেখেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গেলে রোকাইয়ার দাদী তাহমিনা খানম মাশরাফিকে কাছে পেয়ে হাসপাতালের নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
রোকাইয়ার দাদী তাহমিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আজ সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে হাসপাতালের এক আয়া ওয়ার্ডে আসলে তাকে বলি ‘ভাত দাও’। তখন ওই আয়া চিৎকার করে বলে- ‘তোর নাম নেই, তোরে ভাত দিয়া যাবে না’। তখন আমি বলি- ‘সমস্ত রোগী দুপুরের আগেই বাড়ি চলে গেছে, তাদের একজনের খাবার দিলি কি হবেনে?’। তখন ওই আয়া বলেন- ‘যেমন কুকুর তেমন মুগুর না দিলি ঠিক হবেনানে’। এ কথার প্রতিবাদ করলে সে আমার চুলের মুঠি ধরে পায়ের স্যান্ডেল দিয়ে মারিছে।
তিনি বলেন, ‘এমপি মাশরাফি হাসপাতালে আসলে আমি তাকে বলেছিলাম হাসপাতালে ময়লা থাকে, ডাক্তাররা ঠিকমতো আসে না, সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। অসুধ, খাবার দেয় না। এইসব কথা বলার জন্যি আমারে তারা জুতাপেটা করিছে’।
ডায়রিয়া ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে ৬ শয্যার ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল ২৪ জন। সেখানে ১১জনকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। তার মধ্যে রোকাইয়ার পরিবারের কারোর নাম ছিল না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ৬ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ছিল ২৪জন। সেখানে ১১ জনকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। তার মধ্যে রুকাইয়ার পরিবারের কারও নাম ছিল না। এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ আসাদ উজ-জামান মুন্সী বলেন, এক আয়া কর্তৃক রোগীর আত্মীয়কে মারধরের ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করতে হাসপাতালের আরএমও ডা. মশিউর রহমান বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে না আসায় হাসপাতালের ৮জন চিকিৎসক এবং ২জন প্যাথলজিস্টকে শোকজ করেন সাংসদ মাশরাফি।
জানতে চাইলে সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আসাদ-উজ-জামান মুন্সী বলেন, চিকিৎসক-কর্মচারীদের সকাল ৮টায় হাসপাতালে আসার কথা। কিন্তু শনিবার সকাল ৯টার পরে আসার জন্য ৮জন চিকিৎসক, ২জন মেডিকেল প্যাথলজিস্টকে শোকজ করা হলেও সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্তজা রোববার বিকেলে হাসপাতালে এসে শোকজপত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, সাংসদ মাশরাফি ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল সদর হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখে কয়েক চিকিৎসককে শোকজ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। বর্তমানে নড়াইল সদর হাসপাতালে ৩৯জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন ২৯ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।