জুমবাংলা ডেস্ক : মাত্র ২১ টাকা মূল্যের দুটি (ইনজেকশন এ্যাভিল ও এ্যাডরিন) ওষুধ হাসপাতালে না থাকায় চিকিৎসার অভাবে প্রাণ গেল সাপে কাটা গৃহবধূ ঝর্নার।
সোমবার গভীর রাতে বিষধর সাপে কামড় দেয় নিয়ামতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাঁচড়া দিঘীপাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ঝর্নাকে (৪০)। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মারা যান ওই গৃহবধূ।
জানা যায়, সোমবার গভীর রাতে ঝর্নাকে বিষধর সাপে দংশন করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেয়া হয়। ভর্তির পরই রোগীর স্বামীকে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিপ্লব কুমার ভৌমিক এ্যাভিল ও এ্যাডরিন নামের দুটি ইনজেকশন কিনতে বলেন। রাত ২টা থেকে ভোর পর্যন্ত নিয়ামতপুরের সব ফার্মেসি বন্ধ থাকায় অনেক ছোটাছুটি করেও ২১ টাকা মূল্যের ওই ওষুধ দুটি কিনতে পারেননি তিনি।
শেষমেশ সকাল ৭টার দিকে রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় রোগীকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় চাঁচাই বাড়ির জনৈক ওঁঝার কাছে। ওঁঝার চিকিৎসার পর রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকলে পুনরায় তাকে ফিরিয়ে আনা হয় নিয়ামতপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এ সময় চিকিৎসক রোগীর শরীর পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের স্বামী জিল্লুর রহমান জানান, সাপে কাটার পর তার স্ত্রীকে রাত ২টার দিকে ভর্তি করান হাসপাতালে। ভর্তির পরই দুটি ইনজেকশন কিনতে বলেন ডাক্তার। বলেন এ ইনজেকশন ছাড়া চিকিৎসা দেয়া সম্ভব না। তিনি অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও ওষুধ সংগ্রহ করতে পারেননি।
তিনি অভিযোগের সুরে আরও বলেন, ওষুধ সংগ্রহের ব্যাপারে ডাক্তারের কোনো তৎপরতা ছিল না। শেষমেশ সকাল ৭টার দিকে রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। রাতে বললেই তার স্ত্রীকে রাজশাহী মেডিকেলে নিতে পারতেন তিনি। কিন্তু ডাক্তাররা তা করেননি। ডাক্তারদের গড়িমসির কারণেই তার স্ত্রীর মৃত্যু ঘটেছে।
চিকিৎসক ডা. বিপ্লব কুমার ভৌমিক জানান, হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম থাকলেও এ্যাভিল ও এ্যাডরিন নামের দুটো ইনজেকশন না থাকায় রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয়নি। রোগীর স্বজনদের রাজশাহী মেডিকেলে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে করে তারা রোগীকে নিয়ে যান ওঁঝার কাছে। শেষমেশ আবার ফিরে এলেও রোগী ততক্ষণে মারা গেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন জানান, ওষুধ দুটোর সরকারি সাপ্লাই ছিল না। মাঝে মধ্যে এ ওষুধগুলো আসে। তৎক্ষণাৎ ইনজেকশন দুটো না থাকায় অ্যান্টিরিয়েকশনের কারণে রোগীকে এ্যান্টিভেনম থাকলেও তা দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে রোগীর স্বজনদের ব্যক্তিগতভাবে তা কিনতে বলা হয়েছিল। সূত্র : যুগান্তর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।