জুমবাংলা ডেস্ক: কোলাহলের এই নগর থেকে কয়েকটি দিন দূরে চলে গেলে কেমন হয়! ঈদ বা অন্য কোন ছুটি কাজে লাগিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার বাহিরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন আপনার পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব। তাছাড়া বুকিং দিয়ে দিতে পারেন আপনার পছন্দের রিসোর্টে। জুমবাংলার পাঠকদের জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা দেওয়া হবে এখানে। আজ আলোচনা করা হবে গাইবান্ধার ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থান বর্ধনকুঠি নিয়ে।
গাইবান্ধা জেলায় ঐতিহাসিক নিদর্শনের সংখ্যা খুব বেশি নয়। আর ভূতত্ত্বের দিক থেকেও যে এ এলাকা খুব প্রাচীন তাও নয়। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার অন্যতম একটি ঐতিহাসিক স্থানের নাম বর্ধন কুঠি। প্রাচীন বর্ধন কুঠি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সোনালী উপাদান হয়ে আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে।
বহু প্রাচীন কাল থেকেই বর্ধন কুঠি তৎকালীন রাজা বাদশাদের গূরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ইউনিট ছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে বর্ধনকুঠির শাসক ছিলেন রাজা হরিনাথ। পরে ভারতীয় উপমহাদেশ যখন বিভক্তি হয় সে সময় বর্ধনকুঠির সর্বশেষ রাজা শৈলেশ চন্দ্র ভারতে চলে যান।
বর্ধন কুঠির প্রাচীন নাম বর্ধন কোট ছিল। এই ঐতিহাসিক স্থানের নাম বর্ধন কোট থেকে সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তিত হয়ে বর্ধন কুঠি হয়েছে। বহুকাল পূর্বে এই স্থানে বর্ধন নামের একজন শক্তিধর নরপতি বসবাস করতেন এবং তার নামানুসারে এই স্থানের নাম রাখা হয় বর্ধনকোট। আবার ভিন্ন মত অনুসারে, একসময় সেই স্থানে শক্তিধর বর্ধন বংশের কোনো উত্তরসুরী এসে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন, আর সেই সময় তাদের বংশীয় নামের ধারা বজায় রেখে তা বর্ধন কুঠি নামে পরিচিতি লাভ করে।
এক সময় ইদ্রাকপুর পরগানা অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সদর দফতর ছিলো এই বর্ধন কুঠি। চতুদর্শ শতকের শেষের সময় রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ থেকে আর্যাবর পর্যন্ত মোট ১৪৪ জন রাজা বর্ধনকুঠি রাজ্যের শাসন করেছেন। ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম দিকের সময়ে অর্থাৎ ১৬০১ সালে রাজা আর্যাবরের পুত্র রাজা ভগবান ১৬০১ সালে বর্ধন কুঠির পাশাপাশি রামপুরের বাসুদেব মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। পরে ইংরেজদের শাসন আমলে বর্ধন কুঠি জমিদার বাড়ী হিসেবে খ্যাতি পায়।
বর্ধন কুঠিতে কাছাকাছি বেশ কয়েকটি ভবন রয়েছে, যার বেশিরভাগই দ্বিতল বিশিষ্ট। এখানকার বেশিরভাগ ভবনগুলি ঝুঁকিপূর্ণ। তিনটি ভবনে মোটামুটি প্রবেশ করা যায়। বাকিগুলো একেবারেই প্রবেশের অযোগ্য। ভবনগুলোর ছাদ নির্মাণে মূলত ইটের খিলান ব্যবহার করা হয়েছে। দরজাগুলোও খিলান আকৃতির। একটি মাত্র ভবনে জানালা রয়েছে। তবে জানালা বিহীন একটি কক্ষে গম্বুজাকৃতির একটি বায়ুরন্দ্র চোখে পরে।
১৯৬৫ সালে এই স্থানে গোবিন্দগঞ্জ কলেজ স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে কলেজের ক্যাম্পাস ক্রমবিস্তার ও বিভিন্ন কারণে উঁচু বর্ধন কুঠিরের প্রাচীন ভবনগুলো এখন প্রায় ধ্বংস পথে।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে গাইবান্ধা সরাসরি বাস সার্ভিস রয়েছে। ঢাকার যেকোনো প্রধান বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে গাইবান্ধায় যাওয়ার টিকেট পাওয়া যাবে। আর বর্ধনকুঠিতে যেতে হলে গাইবান্ধা থেকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পৌঁছে সেখান থেকে রিকশায় করে বর্ধনকুঠিতে পৌঁছানো যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।