সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ: আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মানিকগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ রফিক সড়কের পাশে নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন। বিল্ডিং কোডের তোয়াক্কা না করেই ইতোমধ্যে দুই তলার কাজ সমাপ্ত করে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। এই ভবনটির বিরুদ্ধে প্রতিবেশী হালিমা বেগম বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত ভবন নির্মাণ কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। আদালতে পরবর্তী শুনানী না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পৌরসভার নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করেই নির্মাণ করা হচ্ছে কাজল কমপ্লেক্স নামের একটি ৯ তলা ভবন। ভবন নির্মাণে রয়েছে আদালতের নিষেধাজ্ঞা। আদালতকে অমান্য করে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি মূলক কাজ চলছে। একইসাথে ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ডের পার্কিং এর জায়গায় হয়েছে শপিং সেন্টার। ভবনটির আশপাশে রাখা হয়নি নিয়ম অনুযায়ী পর্যাপ্ত জায়গা। শহরের শহীদ রফিক সড়কের আফরোজা রমজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ভবনটি কয়েক বছর ধরেই নানা অনিয়ম ও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অদৃশ্য ক্ষমতা বলে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে নির্মাণাধীন এই ভবনের বিরুদ্ধে চলছে আদালতের নিষেধাজ্ঞা। এর আগে, ২০০৯ সালে ৩ তলা ভবনের অনুমতি নিয়ে ৫ তলা ভবন নির্মান করার পর ভবনটি হেলে পড়ে। এতে প্রতিবেশীরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ভবনটির আন্ডার গ্রাউন্ডের পার্কিং এর জায়গায় ভাড়া দেওয়া হয়েছে চাঁদের হাট নামের একটি বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে। এছাড়া পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী ভবনটির আশ পাশে রাখা হয়নি পর্যাপ্ত জায়গা। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, ভবন করতে গিয়ে ভবন মালিক প্রতিবেশীদের সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেছেন।
নির্মাণাধীন ভবনটির বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী প্রতিবেশী হালিমা বেগম বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে করে ভবনটির তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। অথচ গত মাসের ১ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালত পরবর্তী শুনানী না হওয়া পর্যন্ত ভবনটির কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই রোজার মাসেও প্রতিবেশীদের বিরক্ত করে রাতভর চালু রেখেছে ভবন নির্মাণের কাজ। মামলার বাদী আরো জানান, এর আগে ভবনটি নির্মাণকালীন সময়ে নানা অনিয়মের প্রেক্ষিতে অভিযোগ করলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে ১ তলা ভবন নির্মান করবেন এমন মুচলেকা দিয়েছিলেন হামিদুর রশিদ কাজল। আমাকে চাপে রাখতে আমার বাড়ীর টয়লেট বরাবর স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। মামলা তুলে নিতেও দেওয়া হচ্ছে নানা হুমকি ধামকি।
এ বিষয়ে ভবনটির মালিক হামিদুর রশিদ কাজলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনে মন্তব্য করতে অস্বিকৃতি জানান। তিনি জানান, এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হবে। ফোনে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি না।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ রমজান আলী বলেন, আধুনিক শহর গড়তে পৌরসভার নিয়মনীতি অনুসরণ করেই বাড়িঘর নির্মাণ করতে হবে। প্রতিটি ভবনের সাথে অবশ্যই গাড়ি পার্কিং এর জায়গা রাখতে হবে। অন্যথায় নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।