‘ঝড়ে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে, মাথা গোঁজার এককাত্র সম্বল শেষ ঠাঁই ঘরটাও ভেঙে গেছে, এখন খুব কষ্টের মধ্যে আছি’। কীভাবে নতুন করে ঘর তুলবো, দেনা করে ফসল আবাদ করেছিলোম। এখন তো আমার কিছু রইল না’। চোখে-মুখে অনিশ্চয়তা নিয়ে এ কথাগুলোই বলছিলেন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত খোকন মিয়া।
তার মতো প্রায় একই অবস্থা হাফসা বেগমের। স্বামী মারা গেছে দুই বছর আগে। চার মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র সম্বল ছিল বসতঘর, সেটিও এখন আর অবশিষ্ট নেই। নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য নেই তার। খোকন ও হাফসার মতো এমন দুর্দশা আর দুর্ভোগে পড়েছেন ভোলা সদর উপজেলার দক্ষির দিঘলী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া ও বালিয়া গ্রামের শতাধিক পরিবার।
তবে জেলা প্রশাসক বলছে, যেসব পরিবারের ঘর তোলার সামর্থ্য থাকবে না তাদের পুনর্বাসিত করা হবে।
গত রোববার সদরের কোড়ালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, এখনো পড়ে রয়েছে ঝড়ের ধ্বংসস্তূপ। রাস্তায় দুপাশে ভেঙে যাওয়া গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের নাজুক অবস্থা। পথে পথে যেন ঝড়ের ছাপ পড়ে রয়েছে। অনেকের ঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে, কারও বিধ্বস্ত হয়েছে পুরো ঘর। কারও বা ঘরের সঙ্গে রান্না করার চুলাটি পর্যন্ত ভেঙে গেছে। ঘর তুলতে না পারায় প্রচণ্ড রোদে খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন। কেউ আবার প্রয়োজনীয় আসবাপত্র রোদে শুকানোর চেষ্টা করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিউটি বেগম বলেন, চার ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে কষ্টের মধ্যে রয়েছি, ঝড়ে পুরো ঘর ভেঙে গেছে। এখনো নতুন করে ঘর তুলতে পারিনি। ক্ষতিগ্রস্ত শাহিনা বেগম বলেন, চার মেয়ে নিয়েকে নিয়ে কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। ঝড়ের আঘাতে ঘর ভেঙে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, জেলায় মোট ২৫০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রত্যেকটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে এক বান করে টিন, নগদ তিন হাজার টাকা ও ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও যাদের ঘর তোলার সামর্থ্য নেই তাদের গৃহনির্মাণের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।