জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা আতঙ্কে সারাদেশ ও বিশ্ব। সকলকে ঘরে থাকার আহ্বান জানাচ্ছে প্রশাসন। আর তা উপেক্ষা করে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদী এলাকায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কাগদী বাজারের আলমগীর হোসেন, শাহাদত হোসেন, খায়ের মোল্যা, জাফর মোল্যার দোকানসহ ১০/১৫টি দোকানঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে এবং আহত হয়েছে উভয়গ্রুপের ১২ জন। এদিকে পুলিশের দুটি গাড়ি ভাংচুর করা হয় বলে জানা যায়।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বাতাগ্রামের তারিক মাতুব্বর মুরগী কিনতে যায় স্থানীয় খায়ের মোল্যার দোকানে। এ সময় খায়ের মোল্যা পায়ের নিচে রেখে মুরগি জবাই দেওয়ায় তারিক ঐ মুরগি নেবে না বলে জানান। এ সময় তাদের মাঝে তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ের তারিক মাতুব্বরের সাথে থাকা বাতাগ্রামের পিকুল মাতুব্বরের ছেলে সজিব মাতুব্বরকে ধাক্কা দেয় খায়ের মোল্যা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কিছুক্ষণ পরেই বাতাগ্রাম ও কাগদী সজ্জনকান্দা গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যা একপর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি’র গ্রুপের মাঝে রুপ নেয়।
আরো জানা যায়, এই সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামীলীগ গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: আফছার মাতুব্বরের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নাজমুল হোসেন এবং অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান হবি মোল্যা।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই সংঘর্ষ হয় উভয়পক্ষের। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান (হবি) মোল্যার সমার্থকেরা বাজারের আওয়ামীলীগ সমার্থিত বাতাগ্রামের আলমগীরের কসমেটিক্সের দোকান, শাহাদত হোসেনের সারের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরে সালথা থানার পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণে আনে। এর জের ধরে আজ সোমবার (০৬এপ্রিল) সকালে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: আফছার মাতুব্বরের সমার্থকরা পাল্টা কাগদী গ্রামের মনির হোসেনের মুদি দোকান, খায়ের মোল্যার দোকান, জাফর মোল্যার মুদির দোকান, চান্দাখোলা গ্রামের রেজাউলের সারের দোকান ও হবি মোল্যা ও তার ভাই আহসান মোল্যার ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে মাসুদ মিয়া, সৈয়াদ মিয়া, সাকিব শেখ, পিকুল মাতুব্বার, বতু শেখ সহ উভয় গ্রুপের অন্তত ১২ জন আহত হয়। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান (হবি) মোল্যা উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মো: গিয়াস হোসেনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যাতে ঘটনাটি আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের মধ্যে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফছার উদ্দিন মাতুব্বারের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, মুরগী কেনা-বেঁচা নিয়ে গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক খায়ের মোল্যার সাথে আমাদের সমর্থক পিকুল মাতুব্বরে ছেলে সজিব মাতুব্বারের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এনিয়ে রাতেই গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান হবি তার লোকজন নিয়ে আমার লোকের ৪/৫ টি দোকান ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায়। এছাড়া কাগদি বাজারের আওয়ামী লীগ অফিসও ভাংচুর করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ গিয়াস উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, মুরগী কেনা-বেঁচা নিয়ে রকি ও খায়েরের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমার লোক খায়ের মোল্যাকে আফছার মাতুব্বারের সমর্থক বাতাগ্রামের পিকুল মাতুব্বার মারধর করে। এনিয়ে রাতেই বাজারে সংঘর্ষ বাঁধে। এরই সূত্রধরে আফছার মাতুব্বারের লোকজন সকালে কাগদি বাজারের আমার সমর্থকদের কয়েকটি দোকান ও বসতঘর ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে নিয়ে যায়।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সাংবাদিকদের জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শর্টগানের রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।