জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘদিন থেকে চাকরি করছেন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হিসেবে বেতনও পেয়েছেন আখমাড়াই মৌসুমের পূর্ণ মেয়াদে। চাকরিতে স্থায়ী করার আশ্বাসও পেয়েছেন তারা। কিন্তু শ্রম মন্ত্রণালয়ের পর পর দুটি বিজ্ঞপ্তির বরাত দিয়ে কর্তৃপক্ষ জানান, তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। চলতি ২০২১-২২ আখ মাড়াই মৌসুম থেকে তাদের চাকরি নেই।
ঘটনাটি ঘটেছে দেওয়ানগঞ্জ জিল বাংলা চিনি কল লিমিটেডকে ঘিরে। মিলটিতে কর্মকর্তা ৪১, স্থায়ী কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারী ২১৬, শ্রমিক-কর্মচারী ২৮০, চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তা প্রহরী ৩৭ এবং স্থায়ী মৌসুমি পদে ২৭৪ জন কর্মরত। তার মধ্যে স্থায়ী পদে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারী ১৭০ জন। চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক-কর্মচারী হলেও তারা দীর্ঘদিন থেকে এ মিলে চাকরি করে আসছেন। তারা ৮ থেকে ১০ বছর ধরে কাজ করছেন বলে জানা যায়। গত ৫ ও ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থায়ী পদে চুক্তিভিত্তিক ১৭০ শ্রমিক-কর্মচারীর মধ্যে ৯০ জনকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের নাম পদবি উল্লেখ করা হয়েছে। ছাঁটাইয়ের বিপরীতে স্থগিত হওয়া ৬টি মিল থেকে যাদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে ছুটছেন এ মিলে যোগদানের জন্যে। এ পর্যন্ত ৪০ জনের মতো যোগদান করেছেন বলে মিল সূত্র জানায়।
এতে ছাঁটাই হওয়া ওই শ্রমিক-কর্মচারীদের পদে বহাল থাকতে আন্দোলনেও নেমেছেন। কিন্তু জিল বাংলা চিনি কল কর্তৃপক্ষ সে দিকে কর্ণপাত করছে না। ফলে হতাশায় ভুগছেন ছাঁটাই হওয়া ৯০টি শ্রমিক-কর্মচারী পরিবার। জীবন ও জীবিকা নিয়ে হতাশা কাজ করছে তাদের মধ্যে। ছাটাই হওয়া এমনি একজন উপজেলার চরভবসুর পূর্বপাড়ার রেজাউল করিম। তিনি ৮ বছর থেকে ওই মিলে ইলেকট্রনিপ সহকারীর স্থায়ী পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করে আসছেন। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ওই ছাঁটাই বিজ্ঞপ্তিতে তার নামও রয়েছে। তিনি বলেন, ৮ বছর থেকে জিল বাংলা চিনি কলে ইলেকট্রনিপ সহকারীর স্থায়ী পদে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করে আসছি। হঠাৎ করে কর্তৃপক্ষ আমাদের ছাঁটাই করে।
জিল বাংলা চিনি কল সূত্র জানায়, ২০২০-২১ আখ মাড়াই মৌসুম থেকে দেশের ৬টি চিনি কলে সরকারি সিদ্ধান্তে আখ মাড়াই স্থগিত করা হয়েছে।
জিল বাংলা চিনি কল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল হক রায়হান বলেন, মিলটি সরকারি। আমরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারি চাকরি করি। যেহেতু সরকারি সিদ্ধান্তে শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করা হচ্ছে সেহেতু আমাদের ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই। তাছাড়া ছাঁটাইকৃতরা স্থায়ী পদে হলেও তাদের নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক। কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় সে চুক্তি বাতিল বা স্থগিত করতে পারে।
জিল বাংলা চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন নিয়েছে। আমাদের এ ব্যাপারে কোনো মতামত বা ভিন্নমত নেই। স্থগিত হওয়া ওই ৬টি চিনিকল থেকে যারা আসছেন তারা সবাই স্থায়ী পদে স্থায়ী নিয়োগধারী। যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের পদ স্থায়ী হলেও তাদের নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।