জুমবাংলা ডেস্ক : নরসিংদীতে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪৬ জন কিশোর-তরুণকে আটকের পর অপ্রাপ্তবয়স্ক ২৯ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৫ জুলাই) ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিস আল রেজওয়ান।
সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের শেখ হাসিনা সেতুসংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে শনিবার (২৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪৬ জন কিশোর-তরুণকে আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আটক ওই ৪৬ জনের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল ২৯ জন। তাদের অভিভাবকদের ডেকে মুচলেকা নিয়ে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বাকি সাতজন স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন আদালত।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বড় একটি রামদা, তিনটি চাইনিজ কুড়াল, চারটি লোহার পাইপ, একটি চেইন স্টিক ও একটি লোহার বড় ব্লেড। তবে ঠিক কী উদ্দেশে অস্ত্রগুলো ওই ট্রলারে রাখা হয়েছিল, তা ওই কিশোর-তরুণদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেননি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে শেখ হাসিনা সেতু ও এর আশপাশ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছিল। শনিবার রাত ৮টার দিকে সেতুসংলগ্ন মেঘনা নদীতে চলছিল একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। ওই ট্রলারে একদল কিশোর-তরুণকে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে নাচানাচি করতে দেখা যায়।
বিষয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে এলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ওই ট্রলারকে থামার সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু না থামিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি স্পিডবোটে ট্রলারটিকে বিজিবি ও আনসার সদস্যরা আটক করেন। পরে তীরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং করোনা সম্পর্কে সতর্ক করা হয় তাদের।
জিজ্ঞাসাবাদে সন্দেহ হলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিস আল রেজওয়ান ট্রলারটিতে তল্লাশি চালাতে নির্দেশ দেন। পরে ওই ট্রলার থেকে বস্তাভর্তি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ সময় ট্রলারটিতে অবস্থানরত ৪৬ জন কিশোর-তরুণকে আটক করা হয়। পরে নরসিংদী শহর ফাঁড়ি ও করিমপুর নৌফাঁড়ির পুলিশকে ডাকা হয়। তারা এলে আটক কিশোর-তরুণদের নরসিংদী মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, আটক ৪৬ জনের মধ্যে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল ২৯ জন। তাদের অভিভাবকদের ডেকে মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক ১৭ জনের মধ্যে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ১০ জন জড়িত বলে মনে না হওয়ায় তাদের ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাকি সাতজন স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আটক ৪৬ জনেরই বাড়ি সদর উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়নে।
ধারণা করা হচ্ছে, তারা কোনো কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। হয়তো এই কিশোর-তরুণদের কোনো অপরাধ করার পরিকল্পনা ছিল।
আটক কয়েকজন কিশোরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগের দিন জুয়েল (২৮) নামের তাদেরই একজন আনন্দভ্রমণের জন্য নৌকা ঠিক করেন। হানিফ মিয়া (৪২) নামের এক মাঝিকে ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে দুই দিনের জন্য তার ট্রলারটি ভাড়া নেয় তারা। এ ছাড়া নরসিংদী শহরের ঝিলিক লাইটিং হাউস নামের একটি দোকান থেকে দুদিনের জন্য তিন জোড়া সাউন্ডবক্স ভাড়া করা হয়েছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মো. রহিস আল রেজওয়ান জানান, তাদের বহনকারী ওই ট্রলার ও তিন জোড়া সাউন্ডবক্সও জব্দ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।