জুমবাংলা ডেস্ক : বিক্রি না করতে পারায় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ক্ষেতেই নষ্ট হতে চলেছে স্বপ্নের ফসল। উপযুক্ত ক্রেতার অভাবে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বারহাট্টা উপজেলার কৃষকরা বরাবরই ধান চাষে অধিক আগ্রহী। কৃষি বিভাগের উৎসাহে এ বছর বিস্তর জমিতে শাক-সবজি চাষ করেন। অনুকূল পরিবেশ ও কৃষি বিভাগের নিয়মিত তদারকি থাকায় বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মূল্য কমে যাওয়ায় এখন তারা দুশ্চিন্তায় সময় পাড় করছেন।
উপজেলার বাসাউড়া গ্রামের কৃষক আবদুল ওয়াহাব বলেন, আমি ৪০ শতক জমিতে বেগুনের চাষ করি। ফলন খুব ভালো হয়। দামও ভালো ছিল। এক মাস আগে প্রতি মণ ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি শুরু করি। তারপর দাম কমতে থাকে। এখন কেউ কিনেই না। দুইদিন আগে ৪০ মণ বেগুন দেড়শ’ টাকা দরে বেচে দিয়েছি। বলেন, ‘নষ্ট হওয়ার চেয়ে মানুষে খাক’।
‘আজ ৬ মণ বেগুন বিক্রি করছি। দাম দিয়েছে ৪ মনের। ২ মণ ফাউ। ’ কষ্টের সঙ্গে কথাগুলো উচ্চারণ করলেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বারোঘর গ্রামের সবজি-চাষী শিশির চৌধুরী।
শিশির চৌধুরী এই উপজেলার সবজি চাষে এক অন্যরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, করলা, লেবু, বেগুন ও ক্যাপসিকাম থেকে শুরু করে মাল্টা, ড্রাগন সবই চাষ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ৬০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছিল। ১৫ দিন আগে ১ ট্রাক (৪০ মণ) বেগুন পাঠিয়েছিলাম ঢাকার কারওয়ান বাজারে। দাম ধরা ছিল ৩০ হাজার টাকা। তারা ৫ হাজার ১০০ টাকা পাঠিয়েছে। এখন ক্রেতাই নেই। প্রায় ৮০ মণ বেগুন ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে। লাভের আশায় বেগুন করে ছিলাম। এখন খরচ উঠবে না। করোনাভাইরাস আমার ক্ষতি করছে।’
বারহাট্টা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাইমিনুর রশিদ বলেন, বারহাট্টার জনসাধারণ সবজির তুলনায় ধান চাষকেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। সরকারি নির্দেশে এ বছর সবজি চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক সরবরাহ করা হয়।
তিনি বলেন, চলতি বছর উপজেলায় অনেক কৃষক বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫০ জন কৃষক ১৩০ একর জমিতে বেগুনের চাষ করেন। ফলনও বেশ ভালো হয়। কৃষকগণ তাদের ক্ষেতের বেগুন ট্রাক বোঝাই করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতে শুরু করেন। উৎপাদিত পণ্যের ভালো মূল্য পাওয়ায় তারা খুশি ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এখন তাদের মাথায় হাত। অনেক কৃষক জানিয়েছেন, এক মাস আগে প্রতি মণ (৪০ কেজি) বেগুনের বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে। এখন সেই বেগুনের মূল্য নেমে এসেছে প্রতি মণ ১৫০ টাকায়। সময় মতো ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি আমাদেরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।