আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে বলে বেশ কয়েকবার মন্তব্য করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। এবার এই মন্তব্যের কঠোর প্রতিক্রিয়া জানালেন জম্মু ও কাশ্মীরের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, এমন করলে পাকিস্তান তো চুড়ি পরে বসে থাকবে না, অ্যাটম বোমা ফেলবে।
গত রোববার ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিতে হলে তো ভারতের দখল করার কোনো প্রয়োজন নেই। সেখানকার মানুষই চাইছেন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে।
এ ব্যাপারে শ্রীনগরে এক প্রোগ্রাম শেষে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক আবদুল্লাহর কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী যদি এমন বলে থাকেন, তাহলে এগিয়ে যান। আমরা আপনাদের থামানোর কে? কিন্তু মনে রাখবেন, তারা (পাকিস্তান) কিন্তু চুড়ি পরে বসে থাকবে না। তাদের কাছে অ্যাটম বোমা রয়েছে, তারা আমাদের ওপর অ্যাটম বোমা ফেলবে।’
এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করছে কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও তাদের জোটসঙ্গীরা। দলটির নেতারা বলছেন, এনসির এই বর্ষীয়ান নেতা ‘পাকিস্তানের ভাষায়’ কথা বলছেন। বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের ওপর পাকিস্তানের প্রভাব রয়েছে।
ফারুক আবদুল্লাহর দলের কেউ কেউ অবশ্য তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা করে দাবি করছেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে লড়াই শুরু হলে তার পরিণতি যে ভয়ংকর হতে পারে, সে কথাই বোঝাতে চেয়েছেন ফারুক।
এর আগে বেশ কয়েকবার কাশ্মীর ইস্যুতে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের রাজনাথ সিং। গত মার্চে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভির প্রোগ্রাম ‘আপ কি আদালতে’ তিনি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) মানুষ ভারতের অংশ হতে চাইছে। আমরাও এ ব্যাপারে আশাবাদী যে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তখন বলেছিলেন, ‘আমি দেড় বছর আগেই বলেছিলাম, ওই কাশ্মীরে আমাদের হামলা না করলেও চলবে। সেখানে পরিস্থিতি এখন এমন হয়েছে যে, মানুষ ভারতের অংশ হতে চাইছে।’
এ ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা, জানতে চাইলে রাজনাথ বলেন, ‘আমি আর কিছুই বলবো না। আমার বলা উচিতও না। আমরা কোনো দেশে হামলা করছি না। বিশ্বের কোনো দেশে হামলা করার বৈশিষ্ট্য ভারতের নেই। এমনকি অধিকৃত কোনো এলাকাতেও আমরা হামলা করি না।’
দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তান ও ভারত। দুই দেশই বিতর্কিত কাশ্মীরের পুরোটা দাবি করলেও এর কিছু অংশ শাসন করে। কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। এখন উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত হয়েছে। তাই উত্তেজনা আগের চেয়ে কম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।