জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি ঔষধ পাচার এবং অবৈধভাবে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ধ্বংস করার অভিযোগ উঠছে।
শনিবার (৬ মার্চ) গভীর রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারীদের কোয়ার্টারের আশপাশ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ বিপুল পরিমাণ ওষুধ এবং ২০২১, ২০২২ সাল মেয়াদের কিছু ওষুধ জব্দ করে থানা পুলিশ। এ ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন। বস্তা ভর্তি ওষুধ পাচারের ছবি ধারণ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং আরএমও’র বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার সাইদুর রহমান তার ৩-৪জন সহযোগী নিয়ে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে কর্মচারীদের কোয়ার্টারের আঙ্গিনায় ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করছিল। ঔষধ পাচার এবং বিধি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে ঔষধ পোড়ানো খবর পেয়ে স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে স্টোর কিপার ও তার সহযোগীরা সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্মচারীদের কোয়ার্টারের সামনে ও আশপাশ থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ বিপুল পরিমাণ এবং ২০২১ ও ২০২২ সাল মেয়াদের কিছু ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ইনজেকশন ও ৩৮পিস হেক্সিসোল জব্দ করেন। এ সময় স্থানীয় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং আরএমও’র অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও আরএমও’র যোগসাজশে স্টোর কিপার গত শনিবার দিবাগত রাতে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ পাচার করছিলো। বিষয়টি স্থানীয়রা টের পেলে স্টোর থেকে বের করা ঔষধ কোয়ার্টারের আশপাশে ফেলে রেখে স্টোর কিপার আত্মগোপন করে।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মোহাম্মদ আমিরুল্লাহ্ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ধ্বংস করার জন্য ওষুধ বিনষ্ট করার কমিটি থাকা প্রয়োজন। কমিটি না থাকায় স্টোর কিপার কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ও ইনজেকশন ধ্বংস করছিলো। সাংবাদিকরা এই ছবি তুলতে গেলে স্টোর কিপার ভয়ে বাকি ওষুধ কোয়ার্টারের পাশে ফেলে রাখে। স্টোর কিপারকে খুঁজে না পাওয়ায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ওই রাতেই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস সংবাদিকদের জানান, ঔষধ পাচার এবং অবৈধভাবে ধ্বংস করার খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুরো ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। একই সাথে অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।