জুমবাংলা ডেস্ক: ঢাকার হাতিরঝিলে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন ফারজানা ইয়াসমিন (আসল নাম নয়)। সেখানে কয়েকজন ছেলে তাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার বন্ধু প্রতিবাদ করেন। তখন সেই ছেলেগুলো তার বন্ধুকে দল বেধে মারধরও করে। একপর্যায়ে তারা সেখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। খবর বিবিসি বাংলার।
এরকম ঘটনা নতুন নয়। হাতিরঝিলসহ ঢাকার বিভিন্ন উদ্যানে বেড়াতে গিয়ে এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন অনেকেই।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) হাতিরঝিলে ঘুরতে আসা লোকজনকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে ৫০ কিশোরকে আটক করেছে ঢাকার পুলিশ।
একজন ভুক্তভোগী পুলিশ সদর দপ্তরের ফেসবুক পাতায় অভিযোগ জানানোর পর মঙ্গলবার থেকে হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। সেদিন ১৬ কিশোরকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদের মা-বাবার জিম্মায় দেয়া হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহা-পরিদর্শক মো. সোহেল রানা বলছিলেন, হাতিরঝিলে বিনোদন বা অবসর কাটাতে আসা মানুষজনের সময় স্বস্তিদায়ক করার জন্য পোশাকে ও সাদা পোশাকে এখন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কাজ করবে।
অবসর কাটাতে গিয়ে কী ধরণের ভোগান্তির মুখে পড়ে মানুষ
ঢাকার বিভিন্ন পার্কে অবসর কাটাতে গেছেন, এমন বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। এসময় মনসুর আহমেদ নামক এক ব্যক্তি বলছিলেন, তিনি পরিবার নিয়ে এখন আর কোন উদ্যানে যেতে স্বস্তি বোধ করেন না। কারণ সেখানে গেলেই ভিক্ষুক, নানা জিনিস বিক্রেতারা এসে হয়রানি করতে শুরু করে।
মাহমুদা রহমান তার একটি তিক্ত অভিজ্ঞতা জানালেন। একবার ঢাকার একটি পার্কে ঘুরতে যাওয়ার পর একজন হকার এসে তাকে কোন কথা জিজ্ঞেস না করেই কোমল পানীয়ের বোতল খুলে রেখে যান। তারা সেটি চাননি বা স্পর্শও করেননি।
একটু পরে এসে সে টাকা দাবি করে। তারা যখন বলেন যে, তারা তো এটা চাননি, তখন উল্টো তাদের বলা হয়, বোতল খোলা হয়েছে, এখন তাদের টাকা দিতেই হবে।
আরও যেসব ভোগান্তির মুখে মানুষ পড়ে:
- যুগলদের ছবি তুলে বা আটকে টাকা আদায় করা।
- জোর করে বিভিন্ন জিনিস কিনতে বাধ্য করা।
- আইনশৃঙ্খলা দলের সদস্য পরিচয় দিয়ে হয়রানি করা।
- হাঁটার পথে সাইকেল বা মোটরসাইকেল দিয়ে বিরক্তি তৈরি করা।
- বিভিন্ন গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের নামে চাঁদা আদায়।
কীভাবে ঝামেলা এড়ানো যেতে পারে
হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আবদুর রশীদ বলছেন, মানুষজন ঘুরতে আসবে, পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হবে, এটাই স্বাভাবিক। তারা যাতে কোন রকম ঝামেলা বা হয়রানিতে না পড়েন, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। পাশাপাশি তারাও নিজেরা কিছুটা সতর্ক থাকলে অনেক ঝামেলা এড়াতে পারেন।
তিনি যেসব পরামর্শ দিয়েছেন:
- স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফোন নম্বর মোবাইল ফোনে সংরক্ষণ করে রাখা।
- কোনরকম সমস্যা বা হয়রানির মুখে পড়লে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো।
- কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে, এমন ঘটনা দেখতে পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা উচিত।
- রাত গভীর হলে নির্জন বা জনমানবশূন্য স্থানে একা একা না বসা।
- রাতে এমন স্থানের কাছাকাছি থাকা, যাতে বিপদে পড়লে আশেপাশের মানুষ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা পাওয়া যায় ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।