জুমবাংলা ডেস্ক : সালিশ বৈঠকে কিশোরীকে বিয়ে করা আলোচিত সেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এবার পটুয়াখালীর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে প্রেমিকের বড় ভাই আল ইমরান বাদী হয়ে পটুয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত আগামি ৩০ দিনের মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী আল ইমরানের ছোট ভাই হাফেজ রমজানের সাথে একই এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে নাজনিন আক্তারের দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু নাজনিনের বয়স ১৮ বছর না হওয়ায় এতদিন তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেননি। কথা ছিল নাজনিনের বয়স পূর্ণ হলে তারা উভয়েই বিয়ে করবে।
এ নিয়ে উভয়ের পরিবারে টানা-হেঁচড়া চলছিল। এর ফাঁকে গত ২৪ তারিখ নাজনিন ও রমজান বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ খবর নাজনিনের বাবা নজরুল ইসলাম কনকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে জানান। পরে ২৫ তারিখ সকালে ছেলে-মেয়েসহ তাদের পরিবারের সকলকে সালিশের জন্য চেয়ারম্যান তার আয়লা এলাকার বাড়িতে হাজির হতে বলেন।
এক পর্যায়ে নাজনিন, রমজান ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সবাই চেয়ারম্যানের বাড়িতে উপস্থিত হলে সেখানে সালিশি বৈঠক শুরু হয়। পরে সেখানে রমজানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে তাকে মারধর করে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে সেখানে থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী রমজানের ভাই আল ইমরান।
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে সেখান থেকে নাজনিনকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যান চেয়ারম্যান শাহিন। পরে লোকমুখে শুনতে পান যে, চেয়ারম্যান তার ভাইয়ের প্রেমিকা নাজনিনকে পাঁচ লাখ টাকা কাবিন দিয়ে ওইদিন বিয়ে করেন।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হলে পরদিন সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান নাজনিনের কাছ থেকে তালাকনামায় স্বাক্ষর করে নাজনিনকে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এ সময় নাজনিনের সাথে তার প্রেমিক রমজানকেও জোর করে আবার বিয়ে করিয়ে দেয় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন।
রমজানের ভাই জানান, বর্তমানে তাদের গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তাদের বারবার হুমকি দেয়া হচ্ছে এলাকা ছাড়ার।
উল্লেখ্য, আলোচিত এ ঘটনায় হাইকোর্টে চেয়ারম্যানের বিচারের দাবি জানিয়ে একটি পিটিশন দায়ের করেন আইনজীবীরা। পরে হাইকোর্ট আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, পটুয়াখালী পিবিআই এবং জেলা রেজিস্ট্রারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর পরদিন আজ সোমবার দুপুরে প্রেমিকের ভাই আল ইমরান বাদী হয়ে পটুয়াখালীর আদালতেও বিচার চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
হাইকোর্টের ওই আদেশের ব্যাপারে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত এরকম কোনো হাতে এসে পৌঁছেনি। আদেশ হাতে পেলে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।