জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশালে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করীম মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে অভিযুক্ত নগর ডিবি পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহিকে প্রত্যাহার করে মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ কশিনারের নির্দেশে তার উপর এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এদিকে নিহত রেজাউলের বাবার দায়ের করা মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) মঙ্গলবার বিকেলে এসআই মহিউদ্দিন মাহিকে নগর ডিবি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার আদেশ দিয়েছে। বিএমপি কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার বিরুদ্ধে রেজাউল করীমকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগের বিভাগীয় তদন্ত চলছে বলে জানান বিএমপি কমিশনার।
এর আগে বরিশালে রেজাউল করীমকে নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ গ্রেফতারের পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়। মঙ্গলবার বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নালিশী মামলাটি দায়ের করেন মৃত রেজাউলের পিতা মো. ইউনুস মুন্সী।
আদালতে নালিশী অভিযোগ দায়েরকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, মৃত রেজাউল করীমের পিতা মো. ইউনুসের আবেদন বিচারক গ্রহণ করেন।
অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আরও জানান, মামলায় বরিশাল নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহি ও অজ্ঞাত দুই পুলিশ সদস্যকে আসামী করা হয়েছে। অভিযোগকারী মো. ইউনুস মামলায় উল্লেখ করেছেন, অজ্ঞাত দুজনকে দেখলে চিনতে পারবেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মো. ইউনুস মঙ্গলবার বেলা ১১টায় উপস্থিত হয়ে তার ছেলেকে হত্যার অভিযোগে নালিশী মামলটি আদালতে উপস্থাপন করেন। এ সময় বিচারক তার মৌখিক বক্তব্যও শোনেন। দুপুর ২টায় মিনিটে বিচারক ফের আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় আদালতে মামলার বাদী ইউনুস কান্নায় ভেঙে পড়ে পুত্র রেজাউল হত্যার বিচার চান। বিকেলে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ারও নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করীমকে (৩০) গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর সাগরদী এলাকায় হামিদ খান সড়কের বাসার সামনের গলি থেকে আটক করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহি। পরে তাকে মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রেজাউল করীম কারাগারে অসুস্থ হলে গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার রেজাউল করীম মৃত্যুবরন করেন।
রেজাউলের পরিবারের অভিযোগ, উপপরিদর্শক মহিউদ্দিনের নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে রেজাউল মারা গেছেন।
ময়না তদন্ত শেষে শনিবার বিকালে লাশ নিয়ে সাগরদী এলাকার বাসায় পৌঁছার পর কয়েকশ নারী-পুরুষ সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন।
রেজাউলের স্ত্রী মারুফা আক্তার সোমবার জানান, তিনিসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য সোমবার সকালে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের দপ্তরে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন। পুলিশ কমিশনার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলেও বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগে আগে মামলা গ্রহণ করতে অপারগতা জানান। এরপরে রেজাউলের পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।