জুমবাংলা ডেস্ক : পেশায় গার্মেন্ট কর্মচারী হলেও কখনো পুলিশ কর্মকর্তা, কখনো সামরিক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গত ৯ বছরে ৯টি বিয়ে করেছেন ২৯ বছর বয়সী সুলায়মান। এর বাইরে প্রেমিকা রয়েছে আরো ৪ জন। তাদেরও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শুধু বিয়ে নয়, চাকরি দেয়ার নাম করেও শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। অবশেষে চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন প্রতারক সোলায়মান। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় পাহাড়তলী এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রতারক সোলায়মানকে নিয়ে আগেই বেশ কিছু তথ্য পেয়েছিলো গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে আটক করা যাচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে পাহাড়তলী থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (বন্দর) উপ-কমিশনার এসএম মোস্তাইন হোসেন বলেন, প্রতারক সোলায়মানের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। আমরা ওই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে আটক করি। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে প্রতারণার মাধ্যমে গত ৯ বছরে নয়টি বিয়ে করেছে বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। মূলত মোবাইল এপসের মাধ্যমে নিজের ছবি এডিট করে মেয়েদের প্রেমের জালে আবদ্ধ করতো। আবার কোন কোন স্ত্রীর নামে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে পালিয়ে গিয়ে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতো। আবার কোন কোন স্ত্রীর ভাই-বোন এবং আত্মীয় স্বজনকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই সামাজিক মান-মর্যাদার কথা ভেবে অভিযোগ করেন না। কিন্তু অভিযোগ পেলে আমরা এধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারি। এধরনের অপরাধীরা অল্প বয়সী মেয়েদের টার্গেট করে। আর তার প্রতারিত হয়ে আত্মহত্যার পথও বেচে নিতে পারে। আবার যদি সংসারে বাচ্চা আসে সে সন্তান পিতার পরিচয় সংকটে বেড়ে ওঠে এক অনিশ্চয়তায়। অযত্ন-অবহেলায় ওই সন্তানও বিপথে চলে যেতে পারে। তখন সেটা সবার জন্যই ক্ষতি। সুতরাং এই ধরনের প্রতারণা বাড়তে দেওয়া যাবে না। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে।
জানা গেছে, মাত্র ১৭ বছর বয়সে সোলায়মান বরগুনা থেকে জীবিকার অন্বষনে আসেন চট্টগ্রামে। ৮ হাজার টাকা বেতনের কাজ নেন নগরীর একটি গার্মেন্টসে। পেশায় শ্রমিক হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর মোবাইল ফোনে অল্প বয়সী মেয়েদের সাথে কথা বলে তাদেরকে পটিয়ে প্রতারণার জালে ফেলে বিয়ে করার এক অভিনব শিল্প রপ্ত করেন গার্মেন্টস শ্রমিক সোলায়মান। একজন বিয়ে করে পর্যাপ্ত টাকা পয়সা হাতিয়ে তাকে ছেড়ে পিছু নিতেন অন্যজনের।
এদিকে গ্রেফতারের পর প্রতারক সুলায়মানের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় নবম স্ত্রী রহিমার মা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাহাড়তলী থানার এসআই মনির জানান, প্রতারক সোলায়মানের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার রূপজন গ্রামে। তার পিতার নাম মো. শাহজাহান। শনিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।