মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : ঠান্ডা, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে করোনার টেষ্ট করালে পজেটিভ ধরা পড়ে মো: নাসির উদ্দিনের। পেশায় তিনি একজন সরকারী চাকুরীজীবি। তার নিজ বাড়ি চূয়াডাঙ্গা জেলাায়। কর্মসূত্রে মানিকগঞ্জ জেলায় থাকেন তিনি। করোনা পজিটিভ হওয়ার পর তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। ওষুধ পত্র থেকে শুরু করে খাবার হাসপাতাল থেকেই সরবরাহ করার কথা থাকলেও নাসির উদ্দিন বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেওয়া হয়, তা খাওয়া যায় না। মেনু অনুপাতে খাবার দেও্রয়া হয় না। আধা সিদ্ধ মুরগির মাংস দেওয়া হয়। পাঙ্গাস ছাড়া কোনো মাছ দেওয়া হয় না। এছাড়া সময়মত খাবার দেয়না। দুপুরের খাবার দেওয়া হয় বিকেলে। বাধ্য হয়ে নিজেই বাহিরে গিয়ে খাবার কিনে এনে খেতে হয়।
জানা যায়, মানিকগঞ্জে করোনা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত তিন দিনে জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে দেড় শতাধিক ব্যক্তি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের করোনা বিভাগে মোট ৬৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর আইসোলেশনে রয়েছে আরও ৩০ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা সময়মত খাবার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে রোগীরা নিজেরাই বাহির থেকে খাবার কিনে আনছেন। এতে করোনা প্রতিরোধের পরিবর্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
নাসিরের পাশে থাকা আরো কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বলতে গেলে তারাও একই ধরনের কথা বলেন। জেলার শিবালয় উপজেলার রিন্টু নামের আরেক করোনা রোগী বলেন, আজ ১৪ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেওয়া হয়, সেগুলো খেতে পারি না। আমার বোনের বাসা থেকে খাবার দিয়ে যায়, সেই খাবার খাই।
আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন অঞ্জনা বলেন, আমার স্বামীকে নিয়ে তিনদিন আগে হাসপাতালে এসেছি। হাসপাতাল থেকে যে খাবার দিয়েছে তার মান ভালোনা। এজন্য আত্মীয় বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে যাচ্ছে। সেগুলোই খাচ্ছি।
হাসপাতালের খাবার রান্নার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন নারীর সাথে কথা হলে তারা জানান, হাসপাতালের করোনা রোগীদের জন্য আলাদা কোন খাবারের ব্যবস্থা নেই। সাধারণ রোগীদের মতই করোনা রোগীদেরও সকালের নাস্তায় একটি করে রুটি, ডিম ও কলা দেওয়া হয়। রুটিন অনুযায়ী দুপুরে ভাতের সাথে ডাল ও এক পিছ করে মাছ অথবা মাংস দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ কাজী এ. কে. এম রাসেল বলেন, করোনা রোগীদের জন্য খাবারের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই। করোনা রোগীদের সাধারণ রোগীদের মত স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশাদউল্লাহ বলেন, ঠিকাদারের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করতে হয়। তারা সব সময় সঠিকভাবে খাবার দেন না এটা সত্য। যারা হাসপাতালের খাবার খেতে পারেন না তারা বাইরে থেকে কিনে খান অথবা বাসা থেকে নিয়ে আসেন। তবে কোন করোনা রোগী যদি বাহিরে যান তাকে তো আমি হাসপাতালেই রাখবো না। তিনি উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, করোনা রোগীরা বাহিরে খাবার আনতে যাবেন কেন? প্রয়োজনে তিনি আমাদের বলবেন অথবা কাউকে দিয়ে খাবার আনাবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।