জুমবাংলা ডেস্ক : তারা আপন তিন বোন। সঙ্গে রয়েছে এক ফুফাতো বোন।তার সঙ্গে আবার তিন মাস আগে বিয়ে হওয়া ছোট ভাইয়ের স্ত্রীও। এই পাঁচ সদস্য নিয়েই তাদের ‘নারী পকেটমার’ দল। তারা রেলস্টশন, ট্রেনের ভেতর, হাসপাতালসহ যেখানেই লোকের সমাগম বেশি সেখানে গিয়ে কৌশলে মানুষের পকেট কিংবা ব্যাগ থেকে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন হাতিয়ে নেন। এমন পাঁচ সদস্যের নারী পকেটমার দলের সবাই ধরা পড়েছেন।
দীর্ঘদিন থেকেই তারা এই কাজে যুক্ত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর রেলস্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তারা রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে নেমে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করেন। স্টেশন মাস্টারসহ রেলওয়ের অন্য কর্মচারীরা তাদের আটক করেন।এরপর রেলস্টেশনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বসিয়ে দুইজনের সাত দিন করে কারাদণ্ড ও তিন জনের মোট দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এস.এম হাবিবুল হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, হামিদা বেগম (২৭) ও রিপন আখতার (২৮)। অর্থদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- রোজিনা বেগম (২৫), মর্জিনা বেগম (২৫) ও লিজা আখতার (২৩)। এরমধ্যে রোজিনা বেগমের এক হাজার টাকা অন্য দুই জনের পাঁচশ করে টাকা। জরিমানার টাকা আদায় করে মুচলেকা নিয়ে তাদের তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের সবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডল গ্রামে। এই পাঁচ নারী পকেটমার দলের দলনেতা রিপন আখতার। তার আপন দুই বোন রোজিনা বেগম ও হামিদা বেগম। আপন ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লিজা আখতার ও ফুফাতো বোন মর্জিনা আখতারকে নিয়ে তাদের দল। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ জন নারী এক সপ্তাহ ধরে জয়পুরহাটের দিক থেকে ট্রেনে এসে আক্কেলপুর রেলস্টেশনে নেমে আবার রির্জাভ ইজিবাইক নিয়ে জয়পুরহাটে যাচ্ছিলেন। তাদের এমন গতিবিধি দেখে রেলস্টেশন মাস্টার খাদিজা খাতুন ও রেলস্টেশনের কর্মচারীদের সন্দেহ হয়।
পরবর্তীতে আজ সকালে রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে নেমে ওই পাঁচ নারী জয়পুরহাট যাওয়ার জন্য ইজিবাইক রির্জাভ করছিলেন। তখন রেলস্টেশন মাস্টার খাদিজা খাতুন ও রেলস্টেশনের কর্মচারীরা তাদের ডেকে রেলস্টেশন মাস্টারের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা স্টেশন, ট্রেনের ভেতর ও হাসপাতালে পকেট মারার কথা স্বীকার করেন। তখন থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খবর দেওয়া হয়। ইউএনও এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে পাঁচ নারী পকেট মারার কথা স্বীকার করেন।
আক্কেলপুর রেলস্টেশনের মাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, কয়েক দিন আগে রেলস্টেশনে এক নারী ট্রেনযাত্রীর স্বর্ণালংকার খোয়া যায়। রেলস্টেশনের সিসি টিভি ক্যামেরায় পাঁচ জন নারীকে এ ঘটনা ঘটাতে দেখে গেছে। এরপর আমরা রেলস্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রী ও ট্রেনযাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করছিলাম। এই পাঁচ নারী জয়পুরহাট থেকে ট্রেনে এসে আক্কেলপুর রেল স্টেশনে নেমে আবার ইজিবাইকে জয়পুরহাটে যাচ্ছিলেন। একইভাবে আজকে যাওয়ার সময় তাদের পাঁচ জনকে ডেকে আনা হয়। তারা রেলস্টেশন, ট্রেনের ভেতর ও হাসপাতালে পকেট মারার কথা স্বীকার করেছে।
পরবর্তীতে ইউএনও স্যার এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে দুই জনের কারাদণ্ড ও তিন জনকে আর্থিক জরিমানা করেছেন। পাঁচ জনের নারী পকেটমার দলে আপন তিন বোন, তাদের ভাইয়ের স্ত্রী ও একজন ফুফাতো বোন রয়েছে। এদের একজনের ছোট শিশু রয়েছে। ইউএনও এস.এম হাবিবুল হাসান বলেন, পাঁচ নারী পকেটমার দলের সদস্যের অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরা মূলত রেলস্টেশন, ট্রেন ভেতর ও হাসপাতালের মানুষদের টার্গেট করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।