জুমবাংলা ডেস্ক : টিউবেল কিংবা পাম্প নয় এবার গাছের শেকড়ের নিচ থেকে শত বছর ধরে অবিরত বের হচ্ছে সুপেয় পানি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাহাড়ি সীমান্ত এলাকার স্থানীয়রা নানা কাজে এই পানি ব্যবহার করে আসছেন।
এছাড়া এই পানি দিয়ে চাষ করা হয় প্রায় ২০০ একর জমির ফসল। জায়গাটির পরিবেশ ঠিক রাখতে সরকারিভাবে সংরক্ষণসহ সড়কের অবকাঠামো ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জনস্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন, দ্রুত জায়গাটি পরিদর্শন করে যাচাই করবেন তারা।
শুক্রবার (২৪ মে) বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামলপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বৈষ্ণব পাড়া এলাকার পাহাড় ঘেঁষা দুইটি পাকুড় গাছের নিচে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
শতবছর ধরে এভাবেই স্বচ্ছ পানি আসছে শেকড়ের নিচ থেকে। স্থানীয়রা এই গাছ দুটিকে ঝুরঝুরানি বলেন ডাকেন। দিন-রাত একাধারে বের হওয়া এই পানি দিয়ে স্থানীয়রা খাওয়া-চাষাবাদ থেকে শুরু করে সব প্রয়োজনীয় কাজ সারেন। স্থানীয়দের ধারণা এই পানি আসছে অলৌকিকভাবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, বহু বছর ধরে এই গাছ দুটি দেখে আসছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। বর্ষাকাল বা গ্রীষ্মকাল দীর্ঘ এই সময়ে একবারের জন্য বন্ধ হয়নি পানির প্রবাহ। চৈত্র মাসে কিছুটা কম পানি এলেও আষাঢ় মাসে পানির প্রবাহ থাকে প্রবল। গাছ দুটির সামনে থাকা মাঠে ২০০ একর জমিতে দেড় শতাধিক কৃষক চাষাবাদ করেন এ পানি দিয়েই।
বৈষ্ণবপাড়ার বাসিন্দা মো. শিহাব নামের এক যুবক বলেন, আমাদের জন্মের পর থেকে দেখছি এই পানি। সারাবছর ধরে এভাবে পানি বের হচ্ছে। এই পানি খাওয়া, গোসলসহ কৃষিকাজে ব্যবহার হয়। এ অঞ্চলে কোনো পাম্প নেই এই পানিই প্রায় ২০০ একর জমিতে চাষাবাদের কাজে লাগে।
গাছগুলোর পাশেই বাড়ি ৬০ বছর বয়সী মিজানুর রহমানের। তিনি বলেন, আসলে আমি নিজেও জানি না কবে থেকে শুরু হয়েছে এই পানি বের হওয়া। আমি আমার দাদার কাছে শুনেছি তারাও জানে না কবে থেকে বের হচ্ছে এই পানি। বের হওয়া এই পানি দিয়ে আমরা সবকাজ করে থাকি। কিন্তু এটার কোনো সুরক্ষা নেই। রাস্তা ঘাটেরও ঠিক নেই।
প্রতিদিন অদ্ভুত এই গাছগুলো দেখতে আসনে দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা, পানিও নিয়ে যান বোতলে করে। আর এই স্থানটির অবকাঠামোসহ সড়ক মেরামতের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা।
বকশীগঞ্জ থেকে রশেদুল ইসলাম রনি নামের এক ব্যক্তি গাছগুলো দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, অনেক দিন আগে গাছগুলোর কথা শুনেছি। তাই সরাসরি দেখতে আসলাম। এই পানি এতো স্বচ্ছ যে খেয়ে, হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। আর এই গরমে এতো ঠান্ডা পানি শরীর যেন শীতল হয়ে গেল।
জামালপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, এখানে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি হলো মাটির ভেতরের লেয়ারের কোনো প্রেসার বা কোনো গ্যাসের কারণে এমন হতে পারে। যেহেতু গাছগুলোর শেকড় থেকে পানি বের হচ্ছে দ্রুত জায়গাটি পরিদর্শন গিয়ে যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।