নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় চাষিরা বলছেন, বর্তমান বাজারে সরিষার দাম ও চাহিদা ভালো থাকায় অনেকেই সরিষা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাছাড়া সরিষা সিজনে গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি সাজে অন্যরকম এক সাজে। যা পথচারী ও প্রকৃতি প্রেমিদের মুগ্ধ করে।
উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্যমতে, কালীগঞ্জ পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নেই সরিষার চাষ হয়। তবে উপজেলার তুমলিয়া ও জামালপুর ইউনিয়নে সরিষার চাষ একটু বেশি হয়। এ উপজেলায় বারি সরিষা ৯, ১৪, ১৭ ও ১৮ এবং বিনা সরিষা ৯ ও ১১ উচ্চ ফলনশীল জাত ছাড়াও স্থানীয় টরি সেভেন ও মাঘি প্রজাতির রেকর্ড পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, চলতি বছর এ উপজেলায় ২৯৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। গেল বছর ১৫০ হেক্টর জমিতে ২৩৭ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হলেও এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭২ মেট্রিক টন। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ বেশি হয়েছে।
উপজেলা তুমলিয়া ইউনিয়নের পিপ্রাশৈর গ্রামের কৃষাণী স্টেলা জোৎস্না বলেন, আমি প্রতি বছর সরিষার চাষ করি। তবে এবার কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বীজ ও পরামর্শ পাওয়ায় সরিষা চাষ ভালো হয়েছে। সেই সাথে আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষক নয়ন মিয়া জানান, গত বছর ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছিলাম, ফলন খুব ভালো হয়েছে। গত বছরের ভাল ফলন দেখে এবার দ্বিগুন জমিতে সরিষার চাষ করেছি। এবারও ফলন খুব ভালো হয়েছে। আগামীতে হয়তো আরো বেশি জমিতে সরিষার চাষ করার চেষ্টা করবো।
একই এলাকার আরেক কৃষক দিপু রোজারিও বলেন, গত বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি ফলন খুব ভালো হয়েছে। তবে এবারও আমি ৩ বিঘা জমিতেই সরিষার চাষ করেছি এ বছরও ফলন খুব ভালো হয়েছে।
প্রকৃতিপ্রেমি নুরুল ইসলাম বলেন, এই সময়টা কৃষকের সরিষার চাষ প্রকৃতিতে অন্যরকম এক মাত্রা যোগ করে। চারদিকে হলুদের আভায় পথচারীদের মাঝেও আগ্রহ তৈরি হয় সরিষার ক্ষেত ঘুরে দেখার। যে কারণে আমি এবং বন্ধু মহল মিলে সময় সুযোগ পেলেই ঘুরতে আসি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ ফারজানা তাসলিম বলেন, বর্তমানে সরিষার ভালো দাম পাওয়ায় চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। এবারের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া বোরো রোপণের আগে সরিষা একটি অল্প সময়ের ফসল সেই সাথে লাভজনকও।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মূলত টার্গেট হচ্ছে বিদেশ থেকে তেলের আমদানী নির্ভরতা কমানো। এছাড়াও কৃষকের এক ফসলি জমিকে দুই ফসলি এবং দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে বৃদ্ধি করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।