জুমবাংলা ডেস্ক : কালা সোহেল খাঁ, রহিম ও সোহেল। তিনজনের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলায়। বন্ধুত্ব ছোট বেলা থেকেই। এলাকাবাসীর জানে তিনজন ঢাকায় ভাল চাকরি করে। এলাকায় যখন যায় তখন অনেককে দান দক্ষিণা দেয়। কিন্তু ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার রাতে তাদের গ্রেফতারের পরই এলাকাবাসী জানতে পারে তারা পেশাদার গ্রিলকাটা চোর চক্রের সদস্য।
গত কয়েক বছর ধরে তারা রাজধানীর অভিজাত এলাকায় গ্রিলকেটে চুরি করে আসছে। তবে এর মধ্যে কখনো পুলিশের হাতে তাদের ধরা পড়তে হয়নি।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বনানী এলাকার লাফাজ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩৯ লাখ টাকা। তিনটি মোটরসাইকেল এবং গ্রিল কাটা ও তালা ভাঙার কাজে ব্যবহৃত একটি সেলাইরেঞ্জ। গ্রেফতারকৃত রহিমের স্ত্রীকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান।
গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতরা চুরির ৬৫ লাখ টাকা তিনজনে ভাগ করে নেয়। পরে ক্রয় করে তিনটি মোটরসাইকেল। আর চুরির পরপরই গ্রেফতারকৃত রহিম বিয়ে করে। বিয়ের পর স্ত্রীর নামে একটি বেসরকারি ব্যাংকে স্ত্রী রাশিদার নামে ১০ লাখ টাকার এফডিআর ( ফিক্সড ডিপোজিট) করে।
অপরদিকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি এডিসি) গোলাম সাকলায়েন বলেন, ডিজিটাল লকার ভেঙে ৬৫ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী ম্যানেজার বনানী থানায় একটি মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা গুলশান বিভাগও ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ডিবি এডিসি মাহবুবুল হক সজীবের নেতৃত্বে একটি টিম নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানার হুগলা গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে গ্রিল কেটে চুরির অন্যতম সদস্য সোহেল খাঁ ওরফে কালা সোহেলকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বনানী এলাকার সাততলা বস্তিতে অভিযান চালিয়ে রহিমকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৭ লাখ টাকা এবং চুরির টাকায় কেনা একটি মোটরসাইকেল এবং রহিমের স্ত্রী রাশিদার কাছ থেকে চোরাইকৃত টাকার এফডিআর উদ্ধার করা হয়।
এরপর রহিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কড়াইল বস্তির জামাই বাজার আনসার ক্যাম্প এলাকা থেকে সোহেলকে চুরির টাকায় কেনা একটি মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার করা হয়।
ডিবির উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। দিনের বেলা এরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে অফিস,বাসা বাড়ী টার্গেট করে রাখে। রাত গভীর হলে তাদের টার্গেটকৃত অফিস,বাসা বাড়িতে যায়। একজন নিচে থেকে কেউ আসে কিনা পাহারা দেয় এবং অন্যরা তাদের গ্রিল কাটার সরঞ্জাম দিয়ে গ্রিল কেটে ভিতরে ঢুকে মূল্যবান সামগ্রী, টাকা পয়সা চুরি করে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।