তিন মাস বয়সী শিশু হামাগুড়ি দিতে পারে না, হাটতেও পারে না। পুকুরে চলে গেল! কেউ জানল না, দেখলও না। কিভাবে চলে গেল?
শিশুটির মা বাথরুম থেকে ফিরে এসে দেখেন তার তিন মাস বয়সী শিশু বিছানায় নাই।
নিজের শিশু সন্তানকে খুঁজে খুঁজে হয়রান মা, শিশুটিকে আর জীবিত পান নাই। ততক্ষনে শিশুর নিথর দেহ পুকুরের পানিতে ভেসে উঠেছে।
বানিয়াচং থানা পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে।
অন্যদিকে হত্যার মোটিভ বের করতে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেন ও এসআই সঞ্জয় কুমার এবং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সন্দেহভাজন অপরাধীকে খুঁজতে থাকেন।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে নিয়োজিত পুলিশের অনুসন্ধানী চোখ অপরাধীকে খুঁজে বের করতে বেশি সময় লাগে না, ঘাতক যদি আশপাশেই অবস্থান করে থাকে।
শিশুটির বাবা আবু ছালেহ মিয়া এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তুলনা বেগম (২৫) শিশু মোহাম্মদ আলীকে হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করে নেন।
ঘাতক তুলনা বেগম, নিহত শিশুর আপন মামা আল আমিন মিয়ার স্ত্রী। নিহত শিশুর বাবা হতদরিদ্র আবু ছালেহ মিয়ার নিজস্ব কোনো বাড়ি নাই। শ্বশুরবাড়ির পাশে ছাপড়া ঘরে স্ত্রী ও ৮ সন্তান নিয়ে ভাড়া দিয়ে বসবাস করেন।
ঘাতক তুলনা বেগমের একটি মাত্র মেয়ে শিশু আর ননদের ৮ সন্তান এই বিষয়টির পাশাপাশি ননদের ছেলে মেয়েদেরকে বৃদ্ধ শাশুড়ি বেশি বেশি আদর যত্ন করেন বলে অভিযোগ করে নিহত শিশুর মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হতো।
ননদের ওপর প্রতিশোধ নিতেই ননদের তিন মাস বয়সী শিশু সন্তানকে পানিতে ছুড়ে ফেলে হত্যা করে প্রতিশোধ নেয় বলে থানা পুলিশও হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়ে অপরাধ স্বীকার করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সকাল ৮টায় বানিয়াচং উপজেলার ২ নম্বর ইউনিয়নের আদর্শ গ্রামে তিন মাস বয়সী শিশু মোহাম্মদ আলীর লাশ বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২৮ মে) এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
ওই দিনই ঘাতক মামিকে আটক করে বানিয়াচং থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে অভিযুক্ত ঘাতক মামি প্রাথমিকভাবে অপরাধ স্বীকার করে নেয়।
শনিবার (২৯ মে) দুপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় অপরাধ স্বীকার করে।
এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা আবু ছালেহ মিয়া জানান, মামি এরকম ভয়ঙ্কর হতে পারে আমার জানা ছিল না। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। খুব দ্রুত সময়ে আমাদের টিম অপরাধীকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে।
আশা করছি শিশুটির পরিবার ন্যায় বিচার পেতে আমাদের কাছ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।