চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলার আসামী, জামায়াত নেতা ও বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যার স্বাক্ষী হত্যার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো. সেলিমের ভাই মো. কায়সারকে পৌরসভা যুবলীগের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদ দেওয়ায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর যুবলীগের লীগের কমিটিতে কায়সারকে পদ দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে লিখিতভাবে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সাতকানিয়া পৌরসভা যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ঘোষিত ওই কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মো. আনিস ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল। এতে মো. কায়সারকে সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। অথচ কায়সার দীর্ঘদিন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ‘কায়সার ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জামায়াতের ক্যাডারদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করেন। তার ভাই মো. সেলিমও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমন অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের। যুবলীগে পদ পাওয়ার পর থেকে কায়সার আরও বেপরোয়া হয়ে যান।
এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা, বালু মহাল দখল ও ধানি জমি থেকে টপ সয়েল কাটাসহ নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছেন বলে জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে সাতকানিয়া পৌর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ আর জাবের বলেন, ‘আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় মো. কায়সারকে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এমন কখনো দেখিনি। যুক্ত ছিলেন জামায়াত শিবিরের রাজনীতিতে। কিন্তু হঠাৎ করে তাকে দেওয়া হয়েছে পৌর যুবলীগের দায়িত্বশীল পদ। পদ পেয়েই কায়সার অতীতে মতো এখনো এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘দলের জন্য নিবেদীত প্রাণ কর্মীরা পদ পদবী বঞ্চিত হলেও কায়সাররা ঠিকই নেতা বনে যাচ্ছেন টাকার বিনিময়ে।’
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যা মামলার স্বাক্ষী কমোডর গোলাম রাব্বানী হত্যা মামলায় বিচার শেষে ২০০৫ সালের ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে কায়সারের ভাই মো. সেলিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছেন তিনি।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘কায়সার কখনও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। ছিলেন জামায়াত শিবিরের সক্রিয় ক্যাডার। এখন সে যুবলীগের বড় নেতা! প্রকৃত ত্যাগীরা হচ্ছে পদপদবী বঞ্চিত। টাকায় পদ বেচাকেনা হলে তো এমনই হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে থানা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, ওয়ার্ডেও কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে। এসব আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছুই নয়।’
সাতকানিয়া পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ওঠায় আমরা কায়সারকে শোকজ করেছিলাম। সে জবাব দিয়েছেন। জানিয়েছেন দীর্ঘ ১৫ বছর থেকে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।’
জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে কায়সার বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে এসব পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।