রাত ১০ টার দিকে নবীনগর থেকে ওয়েলকাম বাসে (ঢাকা মেট্রো- ১১৯৪০২) উঠি; তখন বাস ভর্তি ছিলো। সাভারে এসে সবাই নেমে যায়। বাসে ছিলাম আমিসহ মাত্র তিনজন। সামনের ড্রাইভারের পাশে মহিলাদের সংরক্ষিত সিটে একটি মেয়ে বসা ছিলো। আমিন বাজারের আগে অন্ধকারাচ্ছন্ন রাস্তা, বাসের হেলপার মেয়েটির পাশে গিয়ে বসলো, আমি বাসের বাম সাইডের ৪ নাম্বার সিটে বসা, আরেকজন ডান সাইডে মাঝামাঝি বসে ঘুমাচ্ছিলেন।
হঠাৎ মেয়েটি চিৎকার দিয়ে উঠলো, আমি দাঁড়িয়ে বললাম কি হলো? মেয়েটি বললো -এই লোক আমার পাশে বসে আমাকে জড়িয়ে ধরছে… এবার হেলপার বলতেছে, আপনি বসেন ভাই। এই মেয়ের মাথায় সমস্যা আছে, ড্রাইভার বলতেছে -কিছু না ভাই, ছাতা চাইছিল (যদি ও তখন বৃষ্টি নাই)। আমাকে বলতেছে আপনার কোন সমস্যা ভাই? ততক্ষণে বাসের সে লোকের ঘুম ভেঙ্গে যায়। দুজন মিলে মেয়েটিকে ড্রাইভারের পাশের সিট থেকে আমাদের সামনে এনে বসাই।
আরেকটু যাওয়ার পর মাঝপথেই হেলপার বললো, ভাই নেমে যান, যাবো না। বল্লাম কেন? তারা বললো ‘আমাদের ইচ্ছা’। মেয়েটিকে সেইফ করার জন্য বললাম, বুঝছি ভাই, মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। আপনি যান। আরেকটু সামনে গিয়ে তেল নেওয়ার জন্য থামালো, নিচে নেমে তখন গাড়ির নাম্বার দেখলাম। ছবি তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম।
পরে উপরে উঠে ঐ হেলপারের ছবি নিলাম তার অজান্তে (যদিও ক্লিয়ার না) ততক্ষণে সে বুঝে ফেলে, আমিও সাথে সাথে ডিলিট করে দিলাম, আমার ফোন চেক করা হলো। পরে ছবিটা recently deleted photo থেকে পাইলাম।
কিছু করার ছিলো না, আমরা মেয়েসহ তিনজন, তারাও তিনজন… এলাকাও তাদের সিন্ডিকেটদের। পরে আমাদের গাবতলীর আগেই নামিয়ে দেয়। পাশে দোকানপাট, মানুষ কিংবা পুলিশ বক্স কিছুই ছিলো না। বাসে থাকতে ৯৯৯ এ কল দিবো সেই সুযোগ ও ছিলো না। মেয়েটি যাবে মাজার রোড পর্যন্ত, পরে আমরা ঐ মেয়েকে সাথে করেই নামি। নামার পর শুনলাম, বলাবলি করতেছে- ওস্তাদ, কাজটা হইলো না।
পরে মেয়েকে মাজার রোড এনে বাসার জন্য রিক্সায় তুলে দেই। (কাছেই ছিলো, বললো যেতে পারবে)। মেয়ের নাম্বার ও সাথের মানুষটার নাম্বার রেখে দিলাম (যদিও চার্জ না থাকায় তখন মেয়ের নাম্বার বন্ধ ছিল)। এসবের শেষ কোথায়? সামাজিক আন্দোলন জোরদার করা দরকার।
প্রশান্তির জায়গা ‘মেয়েটিকে হয়তো সেইফ করতে পারছি’ অনুশোচনার জায়গা ‘লম্পটদের কিছুই করতে পারলাম না’ মাথা তখন কোন কাজই করে নাই। নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ, প্রতিবাদ গড়ে তোলা উচিত। (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।