ধর্ম ডেস্ক : বর্তমান পৃথিবী যুদ্ধ-বিগ্রহ, দূর্নীতি, হিংসা হানাহানিতে ভরে গেছে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় আজ চরম পর্যায়ে চলে গেছে। ।সিরিয়ায় বর্তমানে যে যুদ্ধ চলছে, এই যুদ্ধ বন্ধ করার মত কোন শক্তি পৃথিবীতে নাই। এই যুদ্ধে পৃথিবীর ৮০টি রাষ্ট্র যুক্ত হবে এবং সর্বশেষ এটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হবে।
হাদিস অনুযায়ী একমাত্র হযরত ইমাম মাহদী (আঃ)-ই পৃথিবীতে মহাশান্তি ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তাই ইমাম মাহদী আগমনের ঘটনাটি বর্তমান পৃথিবীর মানুষের জন্য একটি বিরাট ঘটনা। আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে বিস্তর গবেষণার মাধ্যমে ইমাম মাহদীর আগমনের বছরটি খুঁজে পাওয়া গেছে। এজন্য আল্লাহ তায়ালার অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি।
আখেরী জামানার এই সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনাটি, আল্লাহর হাবীব রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর বংশধরের মধ্য হতে হযরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর শুভ আগমনের সেই বহুল প্রতিক্ষীত বছরটি আল্লাহ্ তায়ালার অশেষ রহমতে আমরা আবিষ্কার করে সারা পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য জানিয়ে দিলাম যাতে করে মানুষ সতর্ক ও প্রস্তুতি নিতে পারে, তা না হলে বর্তমান পৃথিবীর আনন্দ উল্লাসে গা ভাসিয়ে দিলে দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে জীবন শেষ হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।
এখন সামনে কি কি ঘটনা ঘটবে, দাজ্জালের ফিতনায় পড়ে মানুষ কিভাবে ইমান হারাবে, ঈমাম মাহদী ও ইসা (আঃ)-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিভাবে পৃথিবীতে মহা শান্তি ফিরে আসবে, তা উল্লেখ করা হলঃ নীচের ৫টি হাদীসে উল্লেখ আছে যে, যে বছর রমজানে সূর্যগ্রহণ এবং চন্দ্রগ্রহণ হবে, সেই বছরই ইমাম মাহ্দীর আর্বিভাব হবে। হাদীসে এটাও উল্লেখ আছে যে, মহাবিশ্বের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত এরকম চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের ঘটনা মাত্র একটি বছরেই ঘটবে।
হাদীসগুলো এইঃ
(১) ‘আল বুরহান ফি আলামাতিল মাহদি’ গ্রন্থের ৩৮ পৃষ্ঠায় আল্লামা মুত্তাকি (রঃ) একটি হাদিস উদ্ধৃত করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “যে বছর রমজান মাসের প্রথম দিকে সূর্যগ্রহণএবং রমজান মাসের শেষের দিকে চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।”
(২) ‘আল কাওলুল মুখতাছার’ গ্রন্থের ৫৩ পৃষ্ঠায় একটি হাদীস উল্লেখ রয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “যে বছর রমজান মাসে দুটি গ্রহণের ঘটনা অনুষ্ঠিত হবে, সেইবছরইইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।”
(৩) ইমামুল আকবারআলী বিন ওমর আল দারাকুতনির ‘সুনানে দারাকুতনি’ গ্রন্থে একটি হাদিস সঙ্কলিত হয়েছে, মোহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে আল হানাফিয়্যাহ (রঃ) বলেছেন, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আবির্ভাবের দুটি নিদর্শন রয়েছে, যা আকাশমন্ডল ও ভূমন্ডলসৃষ্টির পর থেকে কখনো দৃষ্টিগোচর হয়নি, নিদর্শন দুটি হলোঃ যে বছর চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহ্দীর আবির্ভাব হবে।”
(৪) ইমাম রব্বানি মুজাদ্দেদী আলফেসানী (রহঃ)-এর ‘মাকতুবাতে রাব্বানী’ (রাব্বানির প্রত্রাবলী)-র ৩৮০ নম্বর পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, “যে বছর রমজান মাসের প্রথমদিকে সূর্যগ্রহণ ঘটবেএবং রমজান মাসের ১৪ তারিখে চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে, সেই বছরই ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে।”
(৫) ইমাম কুরতুবী (রঃ) রচিত কিতাব ‘মুখতাছার তাজকিয়াহ্’ গ্রন্থের ৪৪০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাইয়্যেদেনা ইমাম মাহদী (আঃ)-এর আগমনের পূর্বে দুটি গ্রহণ রমজান মাসেই ঘটবে।
(৬) নুয়ায়েম ইবনে হাম্মাদ (রঃ) রচিত ‘কিতাবুল ফিতান’ গ্রন্থে সতর্কতামূলক বাণী উল্লেখ করা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা যখন রমজান মাসে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা প্রত্যক্ষ করবে, তখন এক বছরের খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করে রাখবে।”
উপরোক্ত হাদীসগুলোতে বলা হয়েছে, যে বছর রমজান মাসে চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ হবে সেই বছরই ইমাম মাহাদীর আগমন ঘটবে। সেই বছরটা যে কবে হবে তা আল্লাহপাকের অশেষ রহমতে আমরা দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে খুঁজে বের করতে পেরেছি। আখেরী জামানার সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনাটি, আল্লাহর হাবীব রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর বংশধরের মধ্য হতে হযরত ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর শুভ আগমনের বছরটি আল্লাহ্ তায়ালা সারা পৃথিবীর মানুষকে জানাতে চান। এজন্য আল্লাহ তায়ালার অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। এই সালটা আমি কিভাবে বের করেছি সেটা নীচে বর্ণনা করা হলোঃ
(১) প্রথমে প্রতি বছর রমজান কোন তারিখে শুরু হবে সেটা বের করেছি। যেমন ২০১৯ সালের রমজান কত তারিখে শুরু হবে, ২০২০ সালে কত তারিখে, ২০২১ সালে কত তারিখে ইত্যাদি। এই ভাবে ২০৫০ সাল পর্যন্ত একটি লিস্ট তৈরী করেছি।
(২) প্রতি বছর চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন কত তারিখে হবে সেটা বের করার জন্য ঘঅঝঅ-এর ওয়েবসাইট ব্যবহার করেছি যেখানে আগামী ১০০ বছরে কোন বছর কত তারিখে চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন হবে-তার ডাটা টেবিল আকারে উল্লেখ আছে। “নাসা” হচ্ছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এই নাসা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে বড় বড় সরকারী প্রজেক্টের মাধ্যমে নির্ভূলভাবে গবেষণা করে বলতে পারে যে, প্রতি বছর কোন্ তারিখে, কত মিনিটে ও কত সেকেন্ডে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ হবে।
(৩) এরপর রমজান মাসের তালিকা এবং চন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহনের তালিকা পাশাপাশি রেখে দেখা গেল যে, ২০২৬ সালে যে তারিখে রমজান শুরু হবে সেই তারিখে সূর্যগ্রহন হবে এবং ঐ বছর রজমানের ১৫ তারিখে চন্দ্রগ্রহন হবে। ২০২৬ সালে রমজান শুরু হবে ১৮ই ফেব্রুয়ারী এবং নাসার হিসাব অনুযায়ী ২০২৬ সালে ১৭ই ফেব্রুয়ারী সূর্যগ্রহণ হবে। ঐ বছর রমযানের ১৫ তারিখ পড়ে ৩রা মার্চ। আর নাসার হিসাব অনুযায়ী চন্দ্রগ্রহণ হবে ৩রা মার্চ।
অর্থাৎ হাদিস ও নাসার তথ্য অনুযায়ী ২০২৬ সালে ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আবির্ভাবের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ইমাম মাহ্দী সঠিকভাবে কবে আসবেন-এটা আল্লাহ্পাক ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। তবে হাদীসে যে ইঙ্গিতটা উল্লেখ করা আছে, সেই হিসাবে ২০২৬ সালে ইমাম মাহ্দী (আঃ)-এর আবির্ভাবের সম্ভাবনা কতটুকু সেটাই উল্লেখ করেছি মাত্র। সমস্ত জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।