ধর্ম ডেস্ক : কোরবানি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দেয়া হয়। ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের ঘটনায় কোরবানির বিধান এসেছে। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানি দেবেন- কেউ উট, কেউ গরু আর কেউ ছাগল। অনেকে সামর্থ্যের অভাবে একা কোরবানি দিতে পারেন না; প্রয়োজন হয় শরিকে কোরবানি দেয়ার। আর শরিকে কোরবানি দিলে মানতে হয় বেশ কিছু নিয়ম।
ইসলামি শরিয়তে ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দিয়ে শুধু একজনই কোরবানি দিতে পারে। এসব পশু দিয়ে একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করা শুদ্ধ হবে না। আর উট, গরু ও মহিষে সর্বোচ্চ সাতজন শরিক হতে পারবে। সাতের বেশি শরিক হলে কারও কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭০,কাযিখান ৩/৩৪৯)
হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি বলেন, আমরা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হজ করেছিলাম, তখন আমরা সাতজন করে একটি উট এবং একটি গরুতে শরিক হয়ে কোরবানি করেছি। (মুসলিম: ১৩১৮)
ইসলামি ফিকহে, উট, গরু ও মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (হিন্দিয়া: ৫/৩০৪)
আর শরিকে কোরবানি করলে কারও অংশ এক-সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না, এমন হলে কোনো শরিকেরই কোরবানিই শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৭১)
যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেয়ার নিয়তে কিনে আনে আর সে ধনী হয় তাহলে তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ হলেও শরিক না করে একা কোরবানি দেয়াই উত্তম। শরিক করলে ওই অংশের টাকা সদকা করে দেয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি গরিব হয়, যার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব নয়, তাহলে যেহেতু কোরবানির নিয়তে পশুটি ক্রয় করার মাধ্যমে লোকটি তার পুরোটাই আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তাই তার জন্য এ পশুতে অন্যকে শরিক করা জায়েজ নয়। যদি শরিক করে তবে ওই টাকা সদকা করে দেয়া আবশ্যক। গরিব ব্যক্তি কোরবানির পশুতে কাউকে শরিক করতে চাইলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিতে হবে। (হেদায়া: ৪/৪৪৩; কাজিখান: ৩/৩৫০-৩৫১)
শরিকে কোরবানি করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েজ নেই। (আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭,কাযিখান ৩/৩৫১)
কোরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলমগীরী ৫/৩০০)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।