ধর্ম ডেস্ক : মহান আল্লাহ বিভিন্ন বাহানায় তাঁর বান্দাকে ক্ষমা করতে চান। তিনি ক্ষমা করতেই ভালোবাসেন। বান্দাকে শুধু সেই ক্ষমা পাওয়ার জন্য কোরআন-হাদিসের নির্দেশিত পথে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে। নবীজি (সা.) বিভিন্ন সময় সাহাবায়ে কেরামকে এমন কিছু আমল শিক্ষা দিয়েছেন, যেগুলো করলে গোটা জীবনের গুনাহ মাফ হয়ে যাওয়ার সুসংবাদ রয়েছে।
তবে কেউ কেউ এসব হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই হাদিসগুলোতে সগিরা গুনাহের কথা বলা হয়েছে। কবিরা গুনাহ মাফ হওয়ার জন্য বিশুদ্ধভাবে তাওবা করা জরুরি। নিম্নে তার কয়েকটি তুলে ধরা হলো—
উত্তমরূপে অজু করে নামাজ পড়া : উত্তররূপে অজু করে একাগ্রচিত্তে নামাজ আদায় করলে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা পাওয়া যায়।
হুমরান (রহ.) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আমি উসমান (রা.)-কে অজু করতে দেখেছি।
তিনি তিনবার হাতের ওপর পানি ঢাললেন। এরপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন। অতঃপর তিনবার চেহারা (মুখমণ্ডল) ধুলেন। এরপর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন এবং বামহাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন।
এরপর তিনি মাথা মাসাহ করলেন। অতঃপর ডান পা তিনবার ধুলেন অতঃপর বাম পা তিনবার ধুলেন। এরপর বললেন, আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে অজু করতে দেখেছি আমার এ অজুর মতোই। এরপর তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার এ অজুর মতো অজু করে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে এবং এতে মনে মনে কোনো কিছুর চিন্তা-ভাবনায় লিপ্ত হবে না, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)
খাওয়ার পর দোয়া : সাহল ইবনে মুআজ ইবনে আনাস (রহ.) থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি খাওয়ার পরে এ দোয়া পাঠ করবে তার আগে-পরের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০২৩, দারেমি)
পবিত্র হজ পালন : হজ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম আমল। কেউ যদি হজের পরিপূর্ণ আদব রক্ষা করে হজ পালন করতে পারে, তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি হজ করে এবং তাতে কোনো রকম অশ্লীল ও অন্যায় আচরণ না করে তাহলে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮১১)
রমজানের রোজা : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ পুণ্যের আশায় রমজানের সিয়াম ব্রত পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৮)
শবে কদরের আমল : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত জাগবে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৫)
রমজানের কিয়ামুল লাইল : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সঙ্গে ও একান্ত আল্লাহর সন্তষ্টির নিমিত্তে রাতের নামাজ পড়ে তার পূর্ববর্তী গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৬৪)
জামাতের সহিত নামাজ পড়া : আমাদের সবাই নামাজের সুরা ফাতেহার পর আমিন বলে, তবে আমিন আস্তে বলবে নাকি জোরে বলবে তা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। যেভাবেই বলুক, যদি কারো আমিন ফেরেশতাদের আমিনের সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে বলে হাদিসে পাওয়া যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।