ধর্ম ডেস্ক : কিয়োচিরো সুগিমোটো জাপানের সামুরাই সোর্ড তৈরির জন্য বিখ্যাত শহর জিফুর অধিবাসী। তবে তিনি বর্তমানে জাপানের রাজধানী টোকিওর একটি আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে ১৯৯৭ সালে ইসলাম গ্রহণ করেছেন জাপানি এ তরুণ। জাপানে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে নিরলস পরিশ্রম এবং অসামান্য অবদান রেখে চলছেন তিনি। বর্তমানে তিনি জাপানি প্রাকটিসিং মুসলিম ও ইসলামের খ্যাতনামা দাঈ।
ইসলাম গ্রহণের মিশন শুরু- বাংলাদেশের মুসলমানদের আন্তরিকতা ও ইসলামের সুমহান শিক্ষার ইতিবাচক ধারণা লাভের পর কিছুদিন জাপানিজ ভাষায় অনূদিত কুরআন অধ্যয়ন শুরু করেন কিয়াচিরো সুগিমোটো। জাপানি ভাষায় অনূদিত কুরআন পড়ে ইসলাম সম্পর্কে অনুপ্রেরণা লাভ করেন তিনি। সেখানে আল্লাহ তাআলা ও পরকালের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা পান।
সুরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতটিকে নিজের মনে গেথে নেন। সেখানে বলা হয়েছে, আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো ইলাহকে ডেকো না, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোনো ইলাহ নেই, তাঁর (সত্তা) ছাড়া সব কিছুই ধ্বং’সশীল। বিধান তাঁরই আর তাঁর কাছেই তোমাদের ফিরে যেতে হবে।’
এ আয়াতে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি ১৯৯৭ সালে ইসলামের সুমহান পতাকাতলে আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহকে অমান্য করি, উপেক্ষা করি। অথচ একটি সময় সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। আমাদের তার সামনেই দাঁড়াতে হবে।’ দুনিয়ার সব কিছু ধ্বং’স হয়ে যাওয়া, আবার তার কাছে ফিরে যাওয়া এবং তার সামনে দাঁড়ানোর বিষয়টিই আমার অন্তরে এক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
যে প্রতিক্রিয়ায় আমি ইসলাম গ্রহণ করতে বাধ্য হই। কিয়োচিরো সুগিমোটো বর্তমানে ইসলামের একজন দাঈ হিসেবে কাজ করছেন। আন্তর্জাতিক ইসলামি শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা ইরার একজন সদস্য। অবাক করার বিষয় হলো, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের মুসলমানদের দয়া ও হৃদয়গ্রাহী আন্তরিকতায় ইসলামের অনুপ্রাণিত হয়ে কুরআন অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে ইসলাম গ্রহণের মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামের একজন খ্যাতনামা দাঈ হিসেবে আবির্ভূত হন।
কিয়োচিরো সুগিমোটোকে আল্লাহ তাআলা দ্বীনের দাঈ হিসেবে কবুল করুন। মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের উন্নত চরিত্র নিজেদের মধ্যে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন। খালি চোখে কোরআন পড়েন শতবর্ষী জোবেদ আলী ! বয়স তার ১১৯ বছর প্রায়।
যে বয়সে মানুষ বিছানায় মৃ’ত্যু’র প্রহর গোণেন। সেই বয়সে তিনি এখনো হেঁটে চলেন। চশমা ছাড়াই সবকিছু ভালভাবে দেখতে পান। কোনো ওষুধ খেতে হয় না তাকে। নিয়মিত ফজরের নামাজের পর খালি চোখে কোরআন শরীফ তেলোয়াত করেন।
শতবর্ষী এই মানুষটি এখন কুড়িগ্রামে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি কুড়িগ্রাম সফরে এসে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান এনডিসি দেখা করলেন শতবর্ষী এ মানুষের সঙ্গে। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন,
কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী আলেয়া খাতুন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান প্রমুখ।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহ. রাশেদুল হক প্রধান এই বয়োবৃদ্ধকে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এসময় জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন সচিবের মাধ্যমে তাকে অর্থসহায়তা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। শতবর্ষী জোবেদ আলী জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ ১৯০০ সালের ২৫ অক্টোবর হলেও তার বয়স আরও বেশি হবে। বাড়ী কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা সদর ইউনিয়নের মেকুরটারী তেলীপাড়া গ্রামে।
বাবা মৃ’ত: হাসান আলী। স্ত্রীর নাম ফয়জুন নেছা (৮৭)। ব্যক্তিগত জীবনে ৩ পুত্র ও ৪ কন্যার জনক তিনি। আলাপচারিতায় জোবেদ আলী জানান, যুবক বয়স থেকে তিনি নিজস্ব দীঘির মাছ, বাড়িতে পালিত পশুর মাংস, দুধ, ডিম খেতেন। আবাদী জমির ধানের ভাত, খাঁটি ঘি, সরিষার তেল, রাসায়নিক ও সারবিহীন শাক-সবজি উৎপাদন করে সেটাই খেতেন। এই বয়সে ছোট-খাটো সর্দি-জ্বর ছাড়া বড় ধরনের কোনো রোগ-ব্যাধি তার হয়নি।
তিনি জানান, তিনি শতবর্ষ আগে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন বলে জানান। স্পষ্ট উচ্চাড়ণে কোরআন শরীর পড়েন জোবেদ আলী। পত্রিকা ও বইও পড়তে পারেন। রাতে কুপি জ্বালিয়ে কোরআন মজিদ পড়তে তার খুব ভাল লাগে।
তিনি আরও বলেন, কোনোদিন ফজরের নামাজ ক্বাজা করি নাই এবং ফজরের নামাজের পর কোরআন তেলোয়াত করি। তাই হয়তো আল্লাহ পাক আমাকে সুস্থ রেখেছেন। এজন্য আল্লাহর কাছে লাখো শুকরিয়া। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) শেখ মুজিবুর রহমান এনডিসি জানান, ‘ব্যক্তি জীবনে অনেক প্রয়োজনীয় কাজের ভিড়ে আমরা প্রবীণ এই মানুষগুলোকে তেমন একটা গুরুত্ব দেই না।
কিন্তু এই প্রবীণ মানুষগুলোই এক সময় সংসারে প্রাণপাত করে সন্তানদের মুখে খাবার জুগিয়েছেন। মিটিয়েছেন সমস্ত আবদার। তিনি বলেন, বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাদের দিকে তাকানোর যেন কারো সময় হয় না। পারিবারিক মুল্যবোধ তৈরি, সামাজিক নীতি নৈতিকতা, মানবিক আচরণই পারে নবীন ও প্রবীণদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে দিতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।