জুমবাংলা ডেস্ক : হবিগঞ্জের বাহুবলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় উত্তরপত্র মূল্যায়নে অনিয়মের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ২০ সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নিজেদের সন্তানদের অর্থের বিনিময়ে বৃত্তি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত একটি পত্রে এ আদেশ দেন। ওইপত্রে অভিযুক্ত শিক্ষকদের পরবর্তী সব পরীক্ষায় পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব হতে বিরত থাকার কথাও বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার্থীর খাতা ও নম্বর ফর্দে ভুয়া নম্বর প্রদান এবং নম্বর কাটাকাটি করে বৃদ্ধি করা হয়েছে মর্মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মোস্তাফিজুর রহমান রিয়াদ।
অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জসিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলামকে তদন্তভার দেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের উপজেলার প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ৫ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সন্তান বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষক ও নিরীক্ষককে মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে শিক্ষকরা তাদের সন্তানদের বৃত্তি ফাইনাল করেন।
এছাড়া যারা স্কুলের সাময়িক পরীক্ষা এবং মডেল টেস্ট পরীক্ষায় ৪০০ নম্বরের বেশি পায়নি তারা সমাপনী পরীক্ষায় প্রায় ৬০০ নম্বর পেয়েছে। যা অনকেটাই অস্বাভাবিক। ২০১৮ সালে প্রকাশিত বৃত্তি পরীক্ষার খাতা স্ব স্ব উপজেলার শিক্ষকরা নিজে মূল্যায়ন করার কারণেই তাদের পছন্দমতো শিক্ষার্থীদের মার্ক কাটা-ছেঁড়া করে বেশি পাইয়ে দেন।
পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তারা অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পান।
এ প্রেক্ষিতে প্রথমেই হাজীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দেব এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তার বেতন ভাতা।
অন্যান্য অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, আলিয়াপুঞ্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ নার্গিস আক্তার, রাউদগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জলি বেগম, একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী, ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইমরানা আক্তার, পূর্ব জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস, জয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লাকী আক্তার শিউলী, রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রুনা আক্তার, হাফিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক কল্পনা রাণী চক্রবর্তী, ভেড়াখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রীপা রাণী আচার্য্য, করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তাজুল ইসলাম, ভূগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল হক, রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সত্যব্রত পাল, মিরপুর ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক হেনা দেব, গাংধার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আয়েশা খাতুন, দওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সোমা ভট্টাচার্য্য, শাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক প্রাথমিক চন্দ্র পাল, তগলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক প্রতিভা রাণী ঘোষ, নিজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পরিমল চন্দ্র দেব ও দত্তপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিজা আক্তার।
এ ব্যাপারে বাহুবর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল ওয়াহেদ জানান, এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলছে। প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি ডিডি স্যার দেখেন বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। সহকারি শিক্ষকদের বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেখেন। তিনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।