গাজীপুর প্রতিনিধি: বানর মানেই চঞ্চল এক প্রাণী। হরদম ছুটোছুটি আর লাফঝাঁপের জন্য সবার নজর কাড়ে। ওদের মজার কাণ্ডকারখানা সবাইকে মাতিয়ে রাখে। বানরদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট জাত হচ্ছে কমন মার্মোসেট বানর। ব্রাজিল তথা দক্ষিণ আমেরিকায় এ প্রজাতির বানরকে কমন মার্মোসেট বা পিগমি মাঙ্কিও বলা হয়। বাংলাদেশে শুধু সাফারি পার্কেই এ প্রজাতির বানর রয়েছে। এই প্রথম সেখানে এ বানর দুটি শাবকের জন্ম দিয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাতে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের কোয়ারিন্টাইন বেষ্টনিতে পকেট মাঙ্কি পরিবারে দুটি শাবক জন্ম নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে খাবার দিতে গিয়ে মায়ের পিঠ আঁকড়ে থাকা শাবক দুটি নজরে পড়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের।
পার্কে থাকা পূর্ণবয়স্ক তিনটি মার্মোসেট বানরের মধ্যে একটি মাদি এবং দুটি পুরুষ। দুই শাবকসহ পার্কে এখন মার্মোসেট বানর পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে পার্কের বিশেষ তত্ত্বাবধানে থাকা বেস্টনিতে গিয়ে দেখা গেছে, শাবকেরা মা বানরের পিঠ শক্তভাবে আকড়ে আছে। কাউকে দেখলেই অত্যন্ত সতর্কভাবে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। খুব ভালভাবে লক্ষ্য না করলে পিঠের বাচ্চা দুটিকে বোঝা যায় না। এদের দেখতে অনেকটা ছোট সিংহের মত মনে হয়। মাথায় সাদা পশমের ঝুঁটি রয়েছে।
সাফরি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তবিবুর রহমান জানান, এ প্রজাতির প্রতিটি পূর্ণ বয়স্ক বানরের ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম, আর আকার হয় ৯-১০ইঞ্চি। দেহ কালো ঘন পশমে ঢাকা থাকে। তবে মাথায় সাদা তুলার মতো ঝুঁটি ও হাত-পায়ে সাদা পশম থাকে। শরীর কালো ছাড়াও অনেক সময় ধূসর বর্ণের পশমেও আবৃত থাকে। দেহের চেয়ে লেজ বেশ লম্বা হয়। এরা ২/৩ বছরের মধ্যে প্রজনন উপযোগী হয়। গর্ভকালীন সময় ১২০/১৫০দিন।
তিনি আরও জানান, প্রতিবারে এরা সাধারণত দুটি বাচ্চা প্রসব করে। তবে ৩-৪টি বাচ্চা প্রসবেরও তথ্য রয়েছে। আবদ্ধ অবস্থায় ১৫-১৭বছর এবং মুক্ত পরিবেশে ১২/১৩ বছর বাঁচে। শাবকরা প্রায় তিন মাস মায়ের বুকের দুধ পান করে। এরপর তারা অন্যান্য খাবারও খেতে শুরু করে। খাবারের তালিকায় রয়েছে গাছের ছাল, কষ, পাতার রস, রেজিন, বিভিন্ন ফল।
পার্কের ওয়াইল্ড লাইফ সুপারভাইজার মো. আনিসুর রহমান জানান, ২০১৮সালের ৬ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পাঁচারকালে শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগ অন্যান্য পাখি ও প্রাণির সঙ্গে এ মার্মোসেট বানরও জব্দ করে। পরে তা সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন থেকেই তারা পার্কের বিশেষ বেষ্টিনিতে কোয়ারিন্টানে আবদ্ধ রয়েছে। এখনও এরা সেখানেই আছে। দর্শনার্থীদের জন্য এখনও তাদের উন্মুক্ত করা হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।